আল্লাহতায়ালা নারী-পুরুষ সৃষ্টি করেছেন। তাদের মাধ্যমে পূর্ণ করেছেন সভ্যতা। কাউকে উপেক্ষা করে পৃথিবী এগিয়ে যেতে পারবে না। টিকে থাকতেও পারবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেছেন, ‘হে লোকসকল, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তা থেকে তার স্ত্রীকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের দুজন থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু নারী ও পুরুষ।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১)
এই পৃথিবী আল্লাহ সাজিয়েছেন ভোগসামগ্রী দিয়ে। পৃথিবীটাই ভোগের বস্তু। এটা উপভোগ করতে প্রয়োজন ভালো নারী। উত্তম জীবনসঙ্গী। জীবনসঙ্গী উত্তম ও ভালো না হলে পৃথিবী উপভোগ্য হয়ে ওঠে না। আব্দুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীটা হচ্ছে ভোগের বস্তু। আর পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে নেক বা পুণ্যবতী স্ত্রী।’
নারীরা অল্প আমল করেই জান্নাতে যেতে পারবেন। তাদের জান্নাতে যাওয়ার পথ খুবই সহজ। তবে কিছু ভুলের কারণে সে পথ হতে পারে কণ্টকাস্তীর্ণ। যেতে হতে পারে জাহান্নামে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নারীদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘হে নারীরা, তোমরা দান-সদকা করো। বেশি বেশি করে আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। কেননা আমি জাহান্নামে তোমাদের অধিক হারে দেখেছি। এ কথা শোনার পর উপস্থিত নারীদের মধ্য থেকে একজন প্রশ্ন করলেন, হে রাসুলুল্লাহ, আমাদের কেন এ অবস্থা? কেন জাহান্নামে আমরা বেশি সংখ্যায় যাব? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা অধিক মাত্রায় অভিসম্পাত করে থাক এবং নিজ স্বামীদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে থাক।’ (বুখারি, হাদিস: ৩০৪)
অন্ধকার যুগে নারীদের ওপর নানারকম অত্যাচার-নির্যাতন করা হতো। ইসলাম নারীদের অধিকার দিয়েছে। সুন্দর জীবনব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। চারটি কাজের বিনিময়ে তাদের জন্য জান্নাতের ঘোষণা দিয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নারীরা যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে , রমজানে রোজা রাখে, লজ্জাস্থান রক্ষা করে এবং স্বামীর নির্দেশ মান্য করে, তা হলে তারা জান্নাতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারে।’ (ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৪১৬৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের জান্নাতি রমণীরা হচ্ছে, যারা স্বামীর প্রতি প্রেমময়ী ও অধিক সন্তান প্রসবকারিণী। স্বামী রাগ করলে সে এসে স্বামীর হাতে হাত রেখে বলে, আপনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি ঘুমাব না।’ (সহিহুল জামে, হাদিস: ২৬০৪)
নারীদের স্বামীর প্রতি পূর্ণাঙ্গ আনুগত্য স্বীকার করতে হবে। কথা ও কাজের মাধ্যমে তাকে সন্তুষ্ট রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই তাকে অসন্তুষ্ট করা যাবে না।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাকে মানুষের সর্বোত্তম সম্পদ সম্পর্কে অবহিত করব না? তা হলো, নেককার স্ত্রী। সে (স্বামী) তার (স্ত্রীর) দিকে তাকালে স্ত্রী তাকে আনন্দ দেয়। তাকে কোনো নির্দেশ দিলে সে তা মেনে নেয়। সে যখন তার থেকে অনুপস্থিত থাকে, তখন সে তার সতীত্ব ও তার সম্পদের হেফাজত করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৬৬৪)
পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘ফলে পুণ্যবান স্ত্রীরা (আল্লাহ ও স্বামীর প্রতি) অনুগত থাকে এবং পুরুষের অনুপস্থিতিতে তারা তা (অর্থাৎ তাদের সতীত্ব ও স্বামীর সম্পদ) সংরক্ষণ করে, যা আল্লাহ সংরক্ষণ করতে আদেশ দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৩৪)
আজকাল সময় পেলেই নারীরা হিন্দি সিরিয়াল, খোশগল্পে মেতে ওঠে, যা তাদের জন্য ক্ষতিকর। সিরিয়াল দেখে তারা সে অনুযায়ী জীবনযাপন করতে চায়, যা পাপের তাগিদ ছাড়া আর কিছুই নয়। আর খোশগল্প? সে তো গিবতের কারখানা। খোশগল্পের আসরেই নারীরা একে অন্যের গিবত করে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। তাই এসব পাপের ব্যাপারে নারীদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে আয়েশা, আমল বিনষ্টকারী বিষয় (ছোট গুনাহ) থেকে বেঁচে থাকো। কেননা আল্লাহ তা প্রত্যাশা করেন।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪৩৮৪)
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
