টিভি অফিসে আগুনঃ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নেতাদের অপমান করায় ইরাকের রাজধানী বাগদাদে সৌদি মালিকানাধীন বিতর্কিত টিভি চ্যানেল এমবিসির অফিসে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে ইরাকি বিক্ষোভকারীরা।
রয়া নিউজের প্রতিবেদন মতে, সৌদি মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল মিডল ইস্ট ব্রডকাস্টিং সেন্টার (এমবিসি) সম্প্রতি ‘মিলেনিয়াম অব লিবারেশন ফ্রম টেরোরিস্টস’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে দখলদার ইসরাইলি হামলায় নিহত হামাসের প্রয়াত নেতা ইসমাইল হানিয়া, সালেহ আল-আরৌরি ও ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করে।
হামাস ছাড়াও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইরাকের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইরাকি মোবিলাইজেশন ফোর্সের যোদ্ধাদেরও ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিহিত করে। তবে ওই প্রতিবেদনে ইসরাইলি দখলদারিত্ব এবং গাজা ও লেবাননে সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে ৪৪ হাজারেরও বেশি নিরীহ মানুষকে মৃত্যু নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
প্রতিবেদনটি সম্প্রচারি ত হওয়ার এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হয়। হামাসও এই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানায় হয়। গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনি জনগণ যখন ইসরাইলি দখলদারিত্বের হাতে জাতিগত নিধনযজ্ঞের স্বীকার হচ্ছে তখন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলন ও এর নেতাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা উস্কে দিচ্ছে এমবিসি চ্যানেল।
এদিকে বিতর্কিত প্রতিবেদনটির প্রতিবাদে রাস্তায় নামে ইরাকি সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সমর্থকরা। সেই প্রতিবাদ বিক্ষোভের এক পর্যায়ে টিভি চ্যানেলটির বাগদাদ অফিসে হামলা চালানো হয়।
রয়া নিউজের প্রতিবেদন মতে, স্থানীয় সময় শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে এমবিসির বাগদাদ স্টুডিওতে চার থেকে পাঁচশ মানুষ হামলা চালায়। উত্তেজিত জনতা টেলিভিশন চ্যানেলের ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ, কম্পিউটার নষ্ট এবং ভবনের একটি অংশে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং যেসব মানুষ টিভি কার্যালয়ে হামলা চালাতে এসেছিলেন তাদের পুলিশ সরিয়ে দিয়েছে।
সৌদি আরবের টিভি চ্যানেলটি এমন এক সময়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে, যখন ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো বিশেষ করে হামাস ও হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেন, ইরাক ও সিরিয়াতে তাদের মিত্ররাও- এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে রয়েছে।
ইরাকে ইরানপন্থিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। দেশটির সরকার আঞ্চলিক সংঘাত থেকে দূরে থাকার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ইরান ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে ২০২৩ সাল থেকে দেশ দুটির সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
