বিজ্ঞাপন
Saturday, August 16, 2025
Probash Time
  • সর্বশেষ
  • প্রবাস
  • ওমান
  • সৌদি
  • ইউরোপ
  • আমেরিকা
  • মধ্যপ্রাচ্য
  • আন্তর্জাতিক
  • বাংলাদেশ
  • অন্যান্য
    • এশিয়া
    • বাণিজ্য
    • প্রযুক্তি
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • অপরাধ
    • কৃষি
    • খেলাধুলা
    • বিনোদন
    • সামাজিক
    • জানা অজানা
    • চাকরি
    • জীবনের গল্প
    • খোলা কলম
    • মতামত
    • ইউনিকোড টু বিজয় কনভার্টার
No Result
View All Result
Probash Time
  • সর্বশেষ
  • প্রবাস
  • ওমান
  • সৌদি
  • ইউরোপ
  • আমেরিকা
  • মধ্যপ্রাচ্য
  • আন্তর্জাতিক
  • বাংলাদেশ
  • অন্যান্য
    • এশিয়া
    • বাণিজ্য
    • প্রযুক্তি
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • অপরাধ
    • কৃষি
    • খেলাধুলা
    • বিনোদন
    • সামাজিক
    • জানা অজানা
    • চাকরি
    • জীবনের গল্প
    • খোলা কলম
    • মতামত
    • ইউনিকোড টু বিজয় কনভার্টার
No Result
View All Result
Probash Time
সর্বশেষ
বিজ্ঞাপন
Home এশিয়া

মহারথীদের জগতে থেকেও ‘নক্ষত্র’ ছিলেন না রতন টাটা

প্রবাস টাইম ডেস্ক প্রবাস টাইম ডেস্ক
Oct 10
পড়ুন: 2 মিনিটে
0
মহারথীদের জগতে থেকেও ‘নক্ষত্র’ ছিলেন না রতন টাটা
65
VIEWS
বিজ্ঞাপন

Probash Time Google News

বাঙালি চিত্রপরিচালক মুম্বাই পৌঁছেছেন ‘কর্পোরেট’ ছবি তৈরির কাজে। টাটা গ্রুপের কাজ। বিমান থেকে নেমে সটান শুটিং-স্থলে। গিয়েই শুনতে পেলেন, রতন টাটা শুটিং দেখতে আসবেন। এলেনও খানিক ক্ষণের মধ্যে। আলাপ হলো। পরিচয়পর্ব মিটতেই টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যানের প্রশ্ন, “আপনি কবে মুম্বাই এসেছেন?” পরিচালক জানালেন, বিমানবন্দর থেকে সোজা সেখানেই পৌঁছেছেন। শুনে রতন বললেন, “আপনি হোটেলে ফিরে যান। বিশ্রাম নিন। কাল শুটিং করুন। পরিচালকের হতবাক অবস্থা দেখে বললেন, “সদ্য সফর করে এসেছেন। শরীর আর মস্তিষ্ককে বিশ্রাম না দিলে ঠিক মতো কাজ হবে কী করে! আজ থাক। কাল সতেজ হয়ে কাজ শুরু করবেন।

সেই পরিচালকের বিস্ময়ের ঘোর এখনও কাটেনি। কর্পোরেট সংস্কৃতিতে যেখানে ‘আগামীকাল’ বলে কিছু হয় না, সেখানে রতনের মতো এক ব্যক্তিত্ব কি না বলছেন, আগে বিশ্রাম, পরে কাজ! প্রথম পরিচয়েই পরিচালক বুঝেছিলেন, রতন টাটা এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। আর পাঁচজন কর্পোরেট শীর্ষ কর্তার সঙ্গে তার যোজন যোজন ফারাক।

Probashir Helicopter Probashir Helicopter Probashir Helicopter
বিজ্ঞাপন

তিনি যে ব্যতিক্রমী, তার উদাহরণ মেলে শান্তনু নাইডু রচিত স্মৃতিকথা ‘আই কেম আপঅন আ লাইটহাউজ’-এ। এই ‘লাইটহাউজ’ তথা ‘বাতিঘর’টি রতন। বইটির প্রাগ্‌ভাষে যিনি নিজেই জানিয়েছিলেন নিরাশ্রয়, ক্ষুধা পীড়িত, সামাজিক দুর্ব্যবহারের শিকার কুকুর-বিড়ালদের প্রতি সহমর্মিতাই তাকে এবং শান্তনুকে কাছাকাছি এনেছিল। পুনে শহরে শান্তনু এবং তার বন্ধুরা একটি ‘স্টার্ট-আপ’ সংস্থা খুলে ওই জীবদের আশ্রয়দানের চেষ্টা করছিলেন। পথ কুকুরদের প্রতি রতনের মমত্বের কথা জেনে শান্তনু তাকে চিঠি লেখেন। শান্তনুদের কর্মকাণ্ড নিজের চোখে দেখার পর রতন তাদের ঐকান্তিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হন এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। শান্তনুও ক্রমে কাছে আসার সুযোগ পান রতনের। দুই অসমবয়সী মানুষের মধ্যে এক আশ্চর্য সেতুময়তা গড়ে ওঠে, যাকে নিছক ‘বন্ধুত্ব’ বলে দাগিয়ে দেওয়া যাবে না। স্মৃতিকথা জুড়ে শান্তনু লিখেছেন সেই আশ্চর্য মানুষটিকে কাছ থেকে দেখার ইতিবৃত্ত। যেখানে কখনও তিনি অভিভাবক, কখনও বন্ধু, কখনও বা একান্ত সমস্যার সমাধান-সন্ধানী পরামর্শদাতা। ‘লাইটহাউজ’ বা বাতিঘরের সঙ্গেই তার তুলনা খুঁজে পেয়েছেন শান্তনু।

আরওপড়ুন

পাকিস্তান সরকারের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত

চীনের ফেরত দেওয়া বোয়িং কিনতে চায় ভারত

বিজ্ঞাপন

রতনের জন্ম ১৯৩৭ সালে তদানীন্তন বম্বেতে। অগ্নি উপাসক পার্সি পরিবারের সন্তান তিনি। তার বাবা নভল হরমুসজি টাটাকে দত্তক নিয়েছিল টাটা পরিবার। রতনের বছর দশেক বয়সেই তার বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। সেই সময় থেকেই ঠাকুরমা নভাজিবাই টাটা তার দেখাশোনার ভার নেন। আইনানুগভাবে দত্তক নেন রতনকে। রতনের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় মুম্বাইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সেখানেই পড়াশোনা করেন। এরপর তাকে ভর্তি করানো হয় মুম্বাইয়েরই ক্যাথিড্রাল অ্যান্ড জন কনন স্কুলে। পরে তিনি শিমলার বিশপ কটন স্কুল এবং আমেরিকার নিউইয়র্কের রিভারডেল কান্ট্রি স্কুলেও পাঠ নেন। ১৯৫৫ সালে রতন গ্র্যাজুয়েট হন শেষোক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে। ১৯৫৯-এ কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

সত্তরের দশকে রতন তার পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। তাকে প্রথমে টাটা গোষ্ঠীর ব্যবস্থাপক স্তরের একটি পদে নিয়োগ করা হয়। তার পূর্বসূরি জাহাঙ্গির রতনজি দাদাভাই টাটা (যিনি ‘জেআরডি’ হিসাবেই সমধিক পরিচিত) কমবেশি ৫০ বছর শতাব্দী প্রাচীন ওই গোষ্ঠীর দায়িত্ব সামলেছিলেন। জেআরডির উত্তরসাধক হিসাবে রতনের কাছেও প্রভূত প্রত্যাশা ছিল গোষ্ঠীর। প্রথম থেকেই রতন সে ব্যাপারে সচেতনও ছিলেন। ১৯৯১ সালে জেআরডি চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর নেন এবং সেই দায়িত্ব এসে পড়ে রতনের ওপর। নব্বইয়ের দশকে ভারত সরকার উদারীকরণের দিকে ঝোঁকে। সরকারের নয়া নীতির সঙ্গে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির সাযুজ্য খুঁজে পান রতন।

যে সময়ে রতন চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ শুরু করেন, তখন টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ কর্তারা নিজেদের পন্থা অনুসরণ করেই সংস্থা চালাতেন। এতে একই গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থায় বিভিন্ন রকমের পরিচালন পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। রতনের সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জটিই ছিল এই বিবিধ পন্থাকে নীতিগতভাবে একীভূত করা। পুরোনো সংস্থাগুলোর সংস্কার ছাড়াও বেশ কিছু সংস্থা তিনি গোষ্ঠীর পক্ষে অধিগ্রহণ করেন এবং চেয়ারম্যান হিসাবে তার কার্যকালের প্রথম দশকেই ৩২টি নতুন সংস্থা চালু করেন। ভারত সরকারের উদারীকরণ পর্বে ‘টাটা সন্স’-এর জন্ম হয়। এবং ‘টাটা’ শিরোনামের অধীনে টিস্কো (টাটা স্টিল), টাটা কেমিক্যালস, টেলকো (টাটা মোটরস) এবং টাটা টি-এর মতো সংস্থার বিকাশ শুরু হয়। রতনের পরিচালনাতেই টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) পরিষেবা-ক্ষেত্রে পরিচিতি লাভ করে। তার আমলেই টাটা মোটরস-এর নাম নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত হয়। ১৯৯২ থেকে ২০০২ পর্বে চেয়ারম্যান হিসাবে রতনের বিশেষ লক্ষ্য ছিল মোটরগাড়ি, টেলি-যোগাযোগ, বিমা এবং সার উৎপাদক সংস্থাগুলোর বিকাশের দিকে। সেইসঙ্গে শক্তি উৎপাদন ও হোটেল ব্যবসার দিকেও গোষ্ঠী বিশেষ দৃষ্টিপাত করে। শুরু হয় সফটওয়্যার শিল্পে বিনিয়োগ ও তার উৎকর্ষ সাধনের প্রয়াসও।

উদারীকরণের কালে কেন্দ্রীয় সরকার বেশ কিছু সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নেয়। রতন একজন দূরদর্শী হিসাবে বুঝতে পারেন, বিশ্ব অর্থনীতি সেই অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে। সর্বোপরি পরিষেবা ক্ষেত্রে ভারত যে এক নতুন যুগে পা রাখতে চলেছে, তা তিনি অনুধাবন করেছিলেন এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে শুরু করেছিলেন টিসিএস-এর মাধ্যমে। ১৯৯৮-২০০২ পর্বে টাটা সন্স তথা সামগ্রিক অর্থে গোষ্ঠীর পরিচালন বিষয়ে রতন বিস্তর পরিবর্তন ঘটান, যা সংস্থাগুলিকে এক নতুন ‘আচরণবিধি’র মধ্যে নিয়ে আসে। উল্লেখ্য, বিশ্বায়ন পর্বে একটি গোষ্ঠীর সামগ্রিক বিকাশের জন্য এ ধরনের আচরণবিধির প্রয়োজন ছিল। এবং এই দৃঢ় বন্ধন যে সুফল দিয়েছিল, তার প্রমাণ রয়েছে রতন টাটা চেয়ারম্যান থাকাকালীন গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার লভ্যাংশের পরিসংখ্যানে। সংশ্লিষ্ট সময়কালে সংস্থার লভ্যাংশ প্রায় ৫০ গুণ বৃদ্ধি পায়। তার আমলেই ‘টাটা’ ব্র্যান্ডের সংস্থাগুলি ভারত-কেন্দ্রিক অবস্থান থেকে আন্তর্জাতিক চরিত্র লাভ করতে সমর্থ হয়। টাটা মোটরস তার আমলেই ‘জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার’ বা টাটা স্টিল ‘কোরাস’-এর মতো ব্র্যান্ড অধিগ্রহণ করে। নিঃসন্দেহে ভারতের নিরিখে এগুলো বিশ্বায়িত অর্থনীতিতে এক তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের দেশের ছায়া আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘায়ত হওয়ার উদাহরণ।

বিজ্ঞাপন

এরই সমান্তরালে দেশের অভ্যন্তরে মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে মোটর গাড়িকে নিয়ে আসার স্বপ্ন দেখেন রতন। যার ফল টাটা ন্যানো। তার আগে স্বল্পমূল্যে পণ্যবাহী গাড়ি নির্মাণে টাটা মোটরস সাফল্য লাভ করেছে। কিন্তু ন্যানোকে নিয়ে বিস্তৃত রাজনৈতিক চড়াই-উতরাই পেরোনোর পরে তার সম্ভাব্য উৎপাদন কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তার পরেও এই গাড়ির উৎপাদন চালু থাকলেও বাজার এই সীমিত পরিধির মধ্যে আবদ্ধ গাড়িটি গ্রহণ করেনি। সাফল্যের পাশাপাশি ন্যানো প্রকল্পের মতো ব্যর্থতাও রতনের প্রচ্ছায়া হিসেবে সঙ্গেই থেকেছে। কিন্তু তাতে তিনি যে খুব বেশি বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন এমন নয়।

২০১২ সালে রতন ৭৫ বছরে পা রাখেন। সে বছরই তিনি অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য, গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদাধিকারীদের জন্য ৭৫ বছর বয়ঃসীমা নির্ধারণ রতনই করেছিলেন। তার নিজের ক্ষেত্রেই নিয়মটি তিনি প্রথম প্রয়োগ করেন। কিন্তু অবসরের পরেও তার নিজস্ব বিনিয়োগের কাজ তিনি চালিয়ে যান। বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইট, অ্যাপ-ক্যাব, অনলাইন সম্পত্তি বিক্রয় সংস্থায় তিনি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লগ্নি করেন।

টাটা গোষ্ঠী জন্মলগ্ন থেকেই ব্যবসাকে নিছক নিজস্ব সম্পদ বৃদ্ধির আয়োজন হিসাবে দেখেনি। জামশেদজি টাটা থেকে স্যর রতন টাটা পর্যন্ত এই দৃষ্টিভঙ্গি পরম্পরাবাহিত হয়ে এসেছে। রতন তার ব্যতিক্রম তো ননই, বরং বিভিন্ন জনহিতকর বা আরও এক কদম এগিয়ে বললে, প্রাণীহিতকর কাজে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন। প্রথম থেকেই রতন ছিলেন গ্রামোন্নয়ন, চিকিৎসা ও শিক্ষার সর্বজনীন প্রসারের সমর্থক। দেশের জলকষ্টে ভোগা অঞ্চলে শুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ বিষয়ক গবেষণার কাজে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটিকে তিনি অর্থসাহায্য করেছিলেন। সর্বোপরি, স্যার রতন টাটা ট্রাস্টের প্রধান হিসাবেও তিনি অক্লান্তভাবে কাজ করে গেছেন। গ্রামোন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প-সংস্কৃতি এবং গণ উদ্যোগের পৃষ্ঠপোষণা এই ট্রাস্টের কাজ। ২০০০-২০০১ সালের মধ্যে রতনের হাত দিয়ে ৬৫টি নতুন অনুদান সম্ভব হয়। বিবিধ কাজে সেই এক বছরে প্রায় ১৬ কোটি টাকা অনুমোদন করেছিল ট্রাস্ট। ট্রাস্টের দায়িত্বভার হাতে পাওয়ার পর রতন গ্রামের দরিদ্র মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। বিশেষত, কৃষির বাইরে অন্য জীবিকায় গ্রামের মেয়েদের নিযুক্তির ব্যাপারে তাঁর তত্ত্বাবধানে ট্রাস্ট কাজ শুরু করে। এর বাইরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত অঞ্চলে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ ট্রাস্ট নিরলস ভাবে করে গিয়েছে। কৃষির উন্নতির ক্ষেত্রেও গ্রামীণ মানুষকে সহায়তার হাত ট্রাস্ট বাড়িয়ে দেয় রতনেরই পরিকল্পনা মাফিক। একইভাবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও রতন তার উন্নয়নের স্বপ্নকে আকৃতি দানে আজীবন সচেষ্ট ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে রতন যে এক আশ্চর্য মানুষ ছিলেন, তা সর্বজনবিদিত। অকৃতদার রতন তার পদ ও মর্যাদার তুলনায় নিরাভরণ জীবনই যাপন করতেন। শান্তনুর স্মৃতিকথা থেকে এক সুরসিক, স্নেহশীল মানুষের পরিচয়ই পাওয়া যায়। নিজস্ব পরিবার না থাকলেও তিনি যে গোটা টাটা গোষ্ঠীকে পরিবার হিসেবেই ভাবতেন, তা তার একাধিক জীবনীকারের লেখায় লভ্য। দফতরে নিজেই গাড়ি চালিয়ে পৌঁছতেন, সফরের সময়ে একাকীত্বই তার প্রিয় ছিল। তিনি ছিলেন একজন প্রশিক্ষিত বৈমানিকও। ২০০৭ সালে ‘এরো ইন্ডিয়া’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীতে তিনি সহ-পাইলট হিসাবে একটি এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান এবং বোয়িং এফ-১৮ চালিয়ে চমক দিয়েছিলেন।

মৃদুভাষী ও স্নেহশীল মানুষ হিসাবে রতনের পরিচয়ও সমস্ত মহলে সুবিদিত। তার ব্যক্তিগত সাহচর্যে যারা এসেছেন, তারাই একবাক্যে তার সদা বিনয়াবনত স্বভাবের কথা বলেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি ছিলেন ঘোর আত্মবিশ্বাসী। বিপদ সম্পর্কে সর্বদা সজাগ থাকতেন। বিপদকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করার সহজাত ক্ষমতা ছিল তার। ২০০৮ সালে ২৬ নভেম্বর মুম্বাইয়ের তাজমহল হোটেলে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণে বহু মানুষ নিহত হন। রতনের নেতৃত্বাধীন টাটা গোষ্ঠী সেই দুঃসময়ে হোটেলের কর্মচারীদের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছিল, তার দৃষ্টান্ত খুব বেশি পাওয়া যায় না। হোটেল বন্ধ থাকাকালীন সেখানকার যাবতীয় কর্মী, এমনকি অস্থায়ী কর্মীদেরও বেতন যথাসময়ে প্রদান করা হয়। যারা হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাদের তো বটেই, হামলার সময় যে সব পথচারী আহত বা নিহত হয়েছিলেন, তাদের বা তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থাও করেন রতন। সেই সঙ্গে সেই ভয়াবহ ঘটনার স্মৃতি থেকে কর্মীদের বেরিয়ে আসতে একটি মনোচিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করা হয়। টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন হয় রতনেরই পরিকল্পনা অনুযায়ী। হামলায় নিহতদের শেষযাত্রার ব্যাপারেও রতন কোনও খামতি রাখতে চাননি। তিন দিন ধরে সেই শোকাবহ পরিবেশে তিনি নিজেও শামিল ছিলেন প্রিয়জনহারাদের মধ্যে।

রতনের মন্ত্র ছিল, যা আশা করা হচ্ছে, যতখানি আশা করা হচ্ছে, তার খানিক বেশিই দাও। নিজের জীবনকে কখনও বাহুল্যে জর্জরিত না করেও, আত্ম প্রদর্শন আর আত্মপ্রচারের বাইরে থেকেও যে কাজ করা যায়, তা তিনি জানতেন। বাণিজ্যকে সংস্থার স্বার্থের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে বৃহত্তর জগতের স্বার্থ দেখার যোগ্য করে তুলতে চাইতেন তিনি। দেশকে সাম্প্রদায়িকতা এবং জাতপাতের ভেদাভেদ মুক্ত দেখতে চেয়েছেন আজীবন। কীভাবে ইতিহাস তাঁকে মনে রাখবে, সেই প্রশ্নের উত্তরে রতন একদা বলেছিলেন, “ইতিহাস কীভাবে মনে রাখবে আমি জানি না। কিন্তু আমার প্রাপ্তি হল, আমি টাটা গোষ্ঠীকে এক পিতৃতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান থেকে শিল্পোদ্যোগী সংস্থা করে তুলতে সচেষ্ট ছিলাম। বাণিজ্যে তার সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন করলে জবাব দিতেন, “আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিই না। আগে সিদ্ধান্ত নিই, তার পরে তাকে সঠিক প্রমাণের জন্য চেষ্টা শুরু করি। নিজেকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চাইতেন রতন। সারা জীবন তা বজায়ও রাখতে পেরেছিলেন।

তার মৃত্যুকে অনেকেই হয়ত নক্ষত্রপতন বলবেন। কিন্তু রতন যে মেজাজ ও মর্জির মানুষ ছিলেন, তিনি নিজেই নির্ঘাত ‘নক্ষত্র’ শব্দটিতে আপত্তি করতেন। ভারতে বাণিজ্য মহারথীরা ‘নক্ষত্র’ হয়ে ওঠেন অচিরেই। বৈভব আর জৌলুসের আতশবাজি জ্বালিয়ে রাতকে দিন করা তাদের বেশির ভাগের কাছেই প্রিয়তম বিলাস। কিন্তু রতন টাটা নামক অস্তিত্বটি সেই রোশনাই বা কোলাহল থেকে বহু দূরের বিষয়। অনেকটা রাতের আকাশের নক্ষত্রের মতোই। নক্ষত্রের আয়ু শেষ হয়। কিন্তু তার পরেও তার দ্যুতি বেঁচে থাকে বহুকাল। রতন টাটা সেভাবেই থেকে যাবেন।

আরও দেখুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।

city
সূত্র: আনন্দবাজার
বিষয়: নক্ষত্রভারতমহারথী জগতমৃত্যু

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

পাকিস্তান সরকারের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত
এশিয়া

পাকিস্তান সরকারের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত

April 24
সীমান্তে ভারতীয় মা ছেলেসহ ২১ বাংলাদেশি আটক1
এশিয়া

সীমান্তে ভারতীয় মা-ছেলে ও ১৯ বাংলাদেশি আটক

April 24
ভারত নিজেই হামলা করে নাটক সাজিয়েছে
এশিয়া

“ভারত নিজেই হামলা করে নাটক সাজিয়েছে”

April 24
বিজ্ঞাপন
  • Trending
  • Comments
  • Latest
Passport

ওমান থেকেই পাসপোর্টের নাম সংশোধন করতে পারবেন প্রবাসীরা

February 9, 2023
ওমানে জরিমানা ছাড়াই ভিসা নবায়ন করতে পারবে প্রবাসীরা 

যে শর্তে ৩ বছরের ভিসা পাবেন ওমান প্রবাসীরা

October 27, 2021
ইতালি

ইতালিতে কর্মী নিয়োগ শুরু, জেনে নিন আবেদন পদ্ধতি

March 27, 2023
Book

অমর একুশে বই মেলায় কুয়েত প্রবাসীদের কবিতার বই

February 9, 2023
প্রবাসীদের পতাকার মেয়াদ ৩ বছর করলো ওমান

প্রবাসীদের পতাকার মেয়াদ ৩ বছর করলো ওমান

October 25, 2021
মালদ্বীপে আংশিক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু

ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া প্রবাসীদের জন্য সুখবর

August 1, 2024
ওমানের খারিফ মৌসুমের তারিখ ঘোষণা

ওমানের খারিফ মৌসুমের তারিখ ঘোষণা

May 7, 2024
জাপান

জাপানের ‘নেকেড মেন’ উৎসব আর নেই!

February 21, 2024
ওমানে ৩ মাসে লাশ হয়েছেন শতাধিক প্রবাসী

ওমানে ৩ মাসে লাশ হয়েছেন শতাধিক প্রবাসী

0
ওমানে আগুন

ওমানে বাংলাদেশিদের স্থাপনায় আগুন

0
একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্র

একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র

0
ইলিয়াস কাঞ্চনের পিঠের চামড়া থাকবে না

‘ইলিয়াস কাঞ্চনের পিঠের চামড়া থাকবে না’

0
ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতন, দালাল আটক

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতন, দালাল আটক

0
পাকিস্তান সরকারের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত

পাকিস্তান সরকারের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত

0
কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

0
ফেইসবুক এবং আইফোন কোম্পানিকে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা

ফেইসবুক এবং আইফোন কোম্পানিকে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা

0
ওমানে ৩ মাসে লাশ হয়েছেন শতাধিক প্রবাসী

ওমানে ৩ মাসে লাশ হয়েছেন শতাধিক প্রবাসী

April 24, 2025
ওমানে আগুন

ওমানে বাংলাদেশিদের স্থাপনায় আগুন

April 24, 2025
একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্র

একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র

April 24, 2025
ইলিয়াস কাঞ্চনের পিঠের চামড়া থাকবে না

‘ইলিয়াস কাঞ্চনের পিঠের চামড়া থাকবে না’

April 24, 2025
ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতন, দালাল আটক

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতন, দালাল আটক

April 24, 2025
পাকিস্তান সরকারের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত

পাকিস্তান সরকারের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত

April 24, 2025
কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

April 24, 2025
ফেইসবুক এবং আইফোন কোম্পানিকে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা

ফেইসবুক এবং আইফোন কোম্পানিকে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা

April 24, 2025
বিজ্ঞাপন
Probashtime dark

Office: O.C. Centre, 1st Floor, Oman Commercial Center, Ruwi 131, Muscat, Oman.

For News: 01409205456

Email: [email protected]

About Probash Time

  • About us
  • Contact Us
  • Privacy Policy
  • Terms of Use
  • Advertisement
  • Our Team

Follow Probash Time:

Facebook Twitter Youtube Telegram Instagram Threads
No Result
View All Result

ও.সি. সেন্টার, ২য় তলা, ওমান কমার্সিয়াল সেন্টার, রুই ১৩১, মাস্কাট, ওমান।

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ:
ই-মেইল: [email protected]

ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

  • About Us
  • Contact Us
  • Privacy Policy
  • Advertise

কপিরাইট © 2019 - 2025 : প্রবাস টাইম - Probash Time: Voice of Migrants.

No Result
View All Result
  • সর্বশেষ
  • প্রবাস
  • ওমান
  • সৌদি
  • ইউরোপ
  • আমেরিকা
  • মধ্যপ্রাচ্য
  • আন্তর্জাতিক
  • বাংলাদেশ
  • অন্যান্য
    • এশিয়া
    • বাণিজ্য
    • প্রযুক্তি
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • অপরাধ
    • কৃষি
    • খেলাধুলা
    • বিনোদন
    • সামাজিক
    • জানা অজানা
    • চাকরি
    • জীবনের গল্প
    • খোলা কলম
    • মতামত
    • ইউনিকোড টু বিজয় কনভার্টার
This website uses cookies. By continuing to use this website you are giving consent to cookies being used. Visit our Privacy and Cookie Policy.
Probashir city web post