ওমানে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে মহামারী করোনা পরিস্থিতি। দিন দিন বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। করোনার লাগাম টানতে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে ফের রাত্রিকালীন লকডাউন। সেইসাথে যেকোনো সময় ফ্লাইট বন্ধ হতে পারে এমন আশংকা করছেন অনেকেই। সোমবার (২৯-মার্চ) ওমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে দেশটিতে আজ নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৭৯৬ জন এবং মৃত ১ জন।
বর্তমানে আইসিউতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৬১ জন, যা গতকালের তুলনায় আজ বেড়েছে নতুন ১৬ জন। দেশটিতে আক্রান্ত, মৃত এবং আইসিইউতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৮৩ জন এবং মোট সুস্থের সংখ্যা ১ লাখ ৪২ হাজার ৯৪৪ জন। নতুন ১ জনের মৃত সহ মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৬৬২ জন। আজ নতুন সুস্থের সংখ্যা ৫২৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮৪ জন। এখন পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন ৫০৫ জন। মহামারী করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশটিতে গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে রাত্রিকালীন লকডাউন। এতেও ভালো ফলাফল না মিললে পরবর্তীতে পুরপুরি লকডাউনের আশংকা করছেন অনেকেই। সুতরাং লকডাউনে যাতেকরে গত বছরের মতো কোনো ধরণের ভোগান্তিতে না পরতে হয়, সেজন্য সকলকে অন্তত এক মাস চলার মত নগদ অর্থ সাথে রাখতে বলা হয়েছে।
সেইসাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ওমান সরকারের সকল নির্দেশনা মেনে চলতে নাগরিক এবং প্রবাসীদের অনুরোধ জানিয়েছে ওমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অন্যথায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে ওমান সুপ্রিম কমিটি।
এদিকে বাংলাদেশে আজ একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ১৮১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৯৫ জনে। করোনার নতুন স্ট্রেইন দ্রুতই দুর্বল করে দিচ্ছে আক্রান্ত রোগীকে। এ অবস্থায় চিকিৎসা পদ্ধতিতে পরিবর্তন দরকার বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনটি ভয়ংকর হয়ে ওঠায় আরো বাড়াচ্ছে শঙ্কা।
পহেলা মার্চ থেকেই ক্ষিপ্র গতিতে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। মাত্র এক মাসে ২ শতাংশ থেকে সংক্রমণের হার লাফিয়ে লাফিয়ে উঠেছে ১৭ শতাংশে। তবে টিকা নেয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি সবাইকে ভাবাচ্ছে। রোগীর স্বজনরা জানান, পজিটিভ আসার পর থেকেই উনার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। অক্সিজেন দিলে ভালো থাকে। আর না দিলে ৭০ অক্সিজেনের মাত্রা ৭০-এ নেমে আসে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. খলিলুর রহমান বলেন, রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শনাক্তের হারও বেড়েছে। আর করোনার ভ্যারিয়েন্টে শনাক্তের সংখ্যা বেশি হচ্ছে। একই সঙ্গে দ্রুতই রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
আইডিসিআর এর তথ্যমতে, দেশে যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন দুটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অন্তত ৪৮টি দেশে শনাক্ত হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনটি টিকার বিরুদ্ধে কম কার্যকারিতার প্রমাণও রাখছে। তবে সেই ধরনটি বাংলাদেশে কতটা ছড়িয়েছে বা কত মাত্রায় ক্ষতি করছে সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে যাচাইয়ের তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, ভিন্ন একটা স্ট্রেইন আমাদের দেশে এসেছে। ভ্যাকসিন দেয়ার পরও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। নতুন ভ্যারিয়েন্টটা খুব দ্রুতই চড়াচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচলে কঠোরতা আরোপে সরকারের প্রতি আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
