অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দেশ গঠনে অংশ নিতে চান প্রবাসীরা। বাড়াতে চান দেশে টাকা পাঠানোর পরিমাণ। গত দেড় মাসের রেমিট্যান্স প্রবাহে তাদের এমন চিন্তার প্রতিফলনও দেখা যাচ্ছে। যদিও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, চাহিদার অর্ধেক রেমিট্যান্সও আসছে না। প্রবাসী আয় বাড়াতে জনবল রপ্তানির সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াসহ পাঁচ পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
রাজধানীর হাতিরঝিলে কথা হয় দুই ইতালী প্রবাসীর সঙ্গে। গত জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশ যখন উত্তাল হয়ে ওঠে, তখন সংহতি জানান এই দুজনের মতো লাখো প্রবাসী। ডাক দেন রেমিট্যান্স শাটডাউনের। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর দায়িত্ব নেয় নতুন সরকার। নতুন দেশ দেখতে উড়ে আসেন এই দুই প্রবাসীর মতো অনেকেই।
দুবাইয়ে দণ্ডিতদের মুক্ত করা, বিমানবন্দরে সেবার মান বৃদ্ধি, এমন নানা পদক্ষেপে সন্তুষ্ট তারা। প্রবাসীবান্ধব বিনিয়োগ স্কিম ঘোষণার দাবি জানান তারা। পাশাপাশি ব্যাংকে জমানো অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
ইতালি প্রবাসী আহমেদ শাকিল ভুঁইয়া বলেন, ‘জাইকা, আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংক থেকে উচ্চহারে সুদ আনবেন কেন। আপনি আমাকে ইন্টারেস্টটা বাড়ায়ে দেন, আমি আপনাকে দেই (ডলার), আপনি সেই টাকা দিয়ে দেশটা উন্নত করেন। আমাকে আপনি ১৫ পারসেন্ট দিয়ে দেন, অর্থের নিশ্চয়তা দেন।
ইতালি প্রবাসী জাহিদুল অনিক বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমান অনেক সময় সিট খালি রাইখা আসে। কিন্তু আমরা যখন টিকিট বুকিং দিতে যাই তখন দেখি যে টিকিট নাই। আমাদের বলা হয় বিমান ফুল। এই সিস্টেমগুলা চেঞ্জ করা দরকার।
গত আগস্টে প্রবাসীরা বৈধপথে পাঠান দুইশ ২২ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরের ১৪ দিনেই এসেছে ১১৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, সরকারের পতন ও অর্থ পাচার কমায় বৈধপথে বাড়ছে রেমিট্যান্স।
সিপিডি জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকের ভেতরে সুশাসন তৈরি করা দরকার। কারণ দেশের বাইরে যারা থাকেন তারা তো দেশের অর্থনীতির রীতিনীতি অতটা বুঝবেন না। উনাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দেখতে চান যে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অর্থ নিরাপদ আছে।
জনশক্তি রপ্তানির সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ ব্যবসায়ীদের। দক্ষ জনবল তৈরি করা গেলে প্রবাসীদের আয় বাড়বে। তাদের মতে, বাজার বাড়াতে জোর দিতে হবে অর্থনৈতিক কূটনীতিতেও।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, ‘ম্যানপাওয়ার এক্সপোর্টের এইখানে যে সিন্ডিকেটটা আছে, এইটাকে ভেঙে এবং আমাদের এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক কূটনীতি যদি বলেন, যিনি আমাদের সরকারের উপদেষ্টা উনার থেকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর তো বাংলাদেশে আর নেই, সুতরাং এইটা উনি কাজে লাগাতে পারবেন।’
ডলারের খোলা বাজার ও ব্যাংক দরের পার্থক্য কমিয়ে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংককে কড়া নজরদারির পরামর্শও দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
