দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাহ আমানতের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মেগা সব প্রকল্পের উদ্যোগসহ রানওয়ের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে । মেগা প্রকল্পের ফলে দিন দিন বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়লেও বিপরীত দিকে হাঁটছে এয়ারলাইনসের সংস্থাগুলো।
একের পর এক আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট পরিচালনা সংস্থা শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে আস্তে আস্তে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৩টি বিদেশি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট শাহ আমানত থেকে বিমান পরিচালনা বন্ধ করেছে।
জানা গেছে, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ১৯টি এয়ারলাইনস সংস্থা ফ্লাইট পরিচালনা করলেও বর্তমানে ৬টিতে নেমে এসেছে ।
এদিকে, সময়ের সাথে বন্ধ হয়ে গেছে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইটও। শাহ আমানতে বন্ধ হয়ে যাওয়া এয়ারলাইনস সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে থাই এয়ার, থাই স্মাইল এয়ার, কুয়েত এয়ার, ফুকেট এয়ার, মালিন্দো এয়ার, রোটানা এয়ার, হিমালয়ান এয়ার, রাস আল কাইমা (আরএকে) এয়ার, টাইগার এয়ারওয়েজ, সিল্ক এয়ার, ভারতভিত্তিক স্পাইসজেট বিমান, ওমান এয়ার, আলজাজিরা এয়ারওয়েজ, কুয়েতভিত্তিক এয়ারলাইনস জাজিরা এয়ারওয়েজ ইত্যাদি।
এ সময় বর্তমানে এ বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিমান বাংলাদেশ, ইউএস-বাংলা, এয়ার অ্যারাবিয়া, সালাম এয়ার ও ফ্লাই দুবাই।
এদিকে, এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ বলেন, ‘বিদেশি বিমান সংস্থাগুলো এখানে এসেছে ব্যবসা করতে। প্রয়োজন অনুযায়ী যাত্রী পাচ্ছে না বলেই বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট বন্ধ করে দিচ্ছে এখানে আমাদের হাতে কিছু নেই।’
এদিকে, আটাব চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাবেক যুগ্মসম্পাদক এম এ মান্নান জানান, ‘শাহ আমানতে একের পর এক বিমান সংস্থার সেবা বন্ধের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
জানা গেছে, বিমান সংস্থাগুলোর চলে যাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নানান গাফিলতি এবং প্রয়োজনীয় যাত্রী না পাওয়া। বিমান সংস্থাগুলো চলে যাওয়ার কারণে প্রতিযোগিতাও কমে গেছে। এরফলে যাত্রীরা ন্যায্যমূল্যে টিকেট প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
এদিকে, শাহ আমানত বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক রুটে বিমান বন্ধের নেপথ্যে রয়েছে একের পর এক অভিযোগের পাহাড়। এর মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরের নানান অব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা না থাকা, অবকাঠামো, প্যাসেঞ্জারি বিল্ডিং সক্ষমতা না থাকা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাগেজ বেল্ট না থাকা।
তবে, রানওয়ের উন্নতিসহ নানান পদক্ষেপের কারণে বিমানবন্দরের রানওয়ে দিয়ে অনায়াসে এখন বাংলাদেশে আসা সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ ‘বোয়িং ৭৭৭’ কিংবা ‘বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার’ এবং ‘এয়ারবাস এ ৩২০’ নামতে পারছে।
তবে, বিমানবন্দরে একসঙ্গে তিন-চারশ যাত্রীর ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার জন্য পর্যাপ্ত কাউন্টারসহ নেই পর্যাপ্ত ব্যাগেজ বেল্ট। ব্যাগেজ বেল্ট কক্ষেই যাত্রীদের জটলা লেগে যায়। বিমানবন্দরে যাত্রী বেশি হওয়ায় একেকটি লাগেজ পেতে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় লাগছে।
এদিকে সংশ্লিষ্টদের মতে, বিদেশি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে পরিচালনা বন্ধ হলেও বর্তমানে চালু থাকা এয়ারলাইনগুলোর ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে। সংস্থাগুলো কবে থেকে ফ্লাইট বাড়াবে সে বিষয়ে জানায়নি সংশ্লিষ্টরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
