অবশেষে গ্রেফতার হলেন বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতাল প্রতারণা মামলার প্রধান পলাতক আসামি ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদ করিম। করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান ও অর্থ আত্মসাতসহ প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে বুধবার সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত এলাকা থেকেগ্রেফতার করে র্যাব।
দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর বেইলি ব্রিজের পাশে নর্দমার মধ্যে থেকে বোরকা পরা অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারের পর সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফ করেন র্যাবের এডিজি কর্নেল তোফায়েল আহম্মেদ।
সাহেদকে গ্রেফতারের সময় প্রত্যক্ষদর্শী কোমরপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, আজ ভোরে আমরা যখন ফজরের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হয়েছি তখন দেখলাম বেইলি ব্রিজের ওপারে র্যাবের তিনটি গাড়ি এসে থামলো। এরপর র্যাব সদস্যরা চিৎকার করে বলতে থাকেন এই পেয়েছি। ধর ধর। এ সময় আমরা সবাই এগিয়ে গিয়ে দেখতে পেলাম তারা সাহেদকে ধরে ফেলেছেন। পরে তারা তাকে ব্রিজ পার করে এপারে নিয়ে আসেন। এপারে নদীতে একটি নৌকা আছে। সাহেদ তার স্বীকারোক্তিতে র্যাবকে বলেছে এই নৌকাতে করেই নদী পাড়ি দিয়ে তার ভারতে চলে যাওয়ার কথা ছিল।
তিনি ওই ব্রিজের পাশে একটি ছোট ড্রেন দেখিয়ে বলেন, ওইখানে একটি নর্দমার মতো রয়েছে। সেই ড্রেনের ভেতরে বোরকা পরে শুয়ে ছিলেন প্রতারক সাহেদ। শোয়া অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার পরনে শার্ট, প্যান্ট ও বোরকা ছিল। আর তার কোমরে ছিল একটি পিস্তল। পরে র্যাব উপস্থিত জনতার সঙ্গে কথা বলে ও ছবি তুলে তাকে এখান থেকে নিয়ে যায়।
বুধবার ভোর রাত ৫টা ১০ মিনিটের দিকে ইসামতি নদীর পাড়ে একটি নর্দমা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে আসা হয় র্যাব-৬ এর আওতাধীন সাতক্ষীরা র্যাব ক্যাম্পে। সেখান থেকে সকাল ৮টায় নিয়ে আসা হয় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে। এরপর র্যাবের একটি বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকায় নেয়া হয়।
সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র্যাবের এডিজি কর্নেল তোফায়েল আহম্মেদ। তিনি বলেন, আমরা তার (সাহেদ) গতিবিধি আগে থেকেই অনুসরণ করছিলাম। ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিলেন সাহেদ। তিনি সীমান্ত নদী ইসামতি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। সেজন্য দালালদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। সাহেদকে যে দালাল সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছে তাকেও আমরা গ্রেফতার করব।
তিনি আরও বলেন, সাহেদের কাছ থেকে আমরা বিশেষ কিছু তথ্য পেয়েছি। সেগুলো উদঘাটনের জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে সে ব্যাপারে এখনই বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। পরে আবার ব্রিফ করে বিস্তারিত জানানো হবে।
আরও পড়ুনঃ দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণে বিশ্বের ৬নাম্বার অবস্থানে ওমান
সাহেদের বেশ পরিবর্তনের বিষয়ে র্যাবের এডিজি কর্নেল তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, চুলের রং পরিবর্তন করে সাদা চুল কালো করেছেন তিনি। গোফ কেটে কালো করে ফেলেছেন। তার প্ল্যান ছিল মাথা ন্যাড়া করার। ভারতে গেলে হয়ত ন্যাড়া করে ফেলতেন।
র্যাবের এডিজি বলেন, সাহেদকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার কাজে সহযোগিতা করছিল একজন মাঝি, সে সাঁতরে পালিয়ে গেছে। তবে সাহেদ করিম মোটা হওয়ায় হয়তো দৌড়াতে পারেননি। যার কারণে তাকে আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছি। বোরকা পরা অবস্থায় নৌকায় উঠে পালিয়ে যাওয়ার আগেই তাকে আমরা ধরে ফেলেছি।
দেখুনঃ গ্রেফতারের পর র্যাবের হাতে যেভাবে মাইর খেলেন সাহেদ
https://www.facebook.com/jagonews24/videos/1246494459043389/?v=1246494459043389
আরও দেখুনঃ প্রবাস টাইম নিয়ে যা বললেন ওমানের রাষ্ট্রদূত
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
