মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো কর্তৃক জারিকৃত লকডাউনের কারণে প্রায় দেড় মাস যাবত বন্ধ রয়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। বিশেষ করে কনস্ট্রাকশন, শিল্প-কলকারখানা ছোট বড় শপিং মল বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক প্রবাসীরা।
যদিও সৌদি আরবে ২৬ এপ্রিল থেকে কারফিউ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে এবং ওমানে ১০ ধরনের প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারপরেও বাংলাদেশের রেমিটেন্স অর্জনের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার থেকে কমতে শুরু করেছে রেমিটেন্স প্রবাহ।
এসব দেশে কর্মরত প্রবাসীরা বাংলাদেশের মোট রেমিটেন্সের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি যোগান দিয়ে থাকে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের এসব প্রবাসীরা মাস শেষে বেতন পাওয়ার সাথে সাথেই দেশে থাকা প্রিয়জনদের নিকট পাঠাতেন অর্জিত অর্থ। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে কর্ম হারিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছে বেশিরভাগ প্রবাসী।
একদিকে কর্ম হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন অন্যদিকে দেশে থাকা প্রিয়জনদের অর্থনৈতিক কষ্ট, যার কারণে গত একমাসে শুধু সৌদি আরবেই প্রায় দেড় শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুবরণ করেছেন। যা কিনা মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর চেয়েও কয়েক গুণ বেশি। দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৪০ জন প্রবাসী বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তা গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ১২০ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। মার্চে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। যা গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কম। গত বছর একই সময় দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। এদিকে মার্চের আগের মাস ফেব্রুয়ারির তুলনায়ও রেমিট্যান্স ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ কমেছে। ফেব্রুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৪৫ কোটি ২২ লাখ ডলার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের গবেষক ওমার ফারুক প্রবাস টাইমে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্বই এখন অচল। এ সময় রেমিট্যান্স কমাটাই স্বাভাবিক। আমাদের রেমিট্যান্স আহরণের প্রধান দেশ সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্য, ইতালি, জার্মানিসহ ইউরোপ, আমেরিকার মতো দেশগুলো কঠিন অবস্থায় পড়েছে। অনেক প্রবাসীর চাকরি চলে যাচ্ছে। ফলে ইনকাম নেই বললেই চলে। এমন অবস্থায় প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠাবে দূরের কথা তাদের খরচ মেটানোই এখন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
প্রণোদনার অর্থ পরিশোধের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। ফলে বৈধ পথে বাড়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ। কিন্তু করোনাভাইরাসের আঘাতে এটি নেতিবাচক ধারায় চলে গেল। এ অবস্থা কত দিন থাকবে তা এখন অনিশ্চিত।
https://www.youtube.com/watch?v=pDEAOgVSzCo&t=82s
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
