করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশ্ব বাজারে তেলের চাহিদা কমে তলানিতে নেমেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে যে তেলের দাম ১০০ ডলারের ওপরে ছিল তা এখন ২০ ডলারে নেমে এসেছে। দুবাই মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জ (ডিএমই) জানিয়েছে, ওমানে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নিম্নমুখী রয়েছে তেলের বাজার দর। এই দাম কমতে কমতে ২০ ডলারে এসে পৌঁছেছে।
ডিএমই’র এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “২০২০ সালের ওমানের অপরিশোধিত তেল চুক্তি (ওকিউডি)-এর অনুযায়ী প্রায় ০.৫৫ ডলার করে বর্তমানে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম ১৯.৪৫ ডলার। ডিএমই আরো বলে, গত ২৪ শে এপ্রিল দেশটিতে তেলের ব্যারেল প্রতি দাম ছিলো ২০ ডলার ও ২৩শে এপ্রিল দাম ছিলো ২১.১৫ ডলার। গত ২১ শে এপ্রিল ওমানে অপরিশোধিত তেলের দাম ২১.৪৯ ডলার যা ৮.৮ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল হয়েছে ১৯.৪৫ ডলারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম ১১০ ডলার ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে অর্থনৈতিক মন্দার জেরে দাম কিছুটা কমেছিল। কিন্তু এখন করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে শিল্প কারখানা সব বন্ধ। এতে করে তেলের দাম কমে গেছে। গত দুই মাসে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের চাহিদা কমেছে ৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুনঃ ওমানে স্বল্প পরিসরে খুলবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান
এদিকে গত সোমবার (২০-এপ্রিল) ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মার্কিন তেলের দাম শূন্যের নিচে নেমে গেছে। এর অর্থ হলো, উৎপাদকেরা তেল কেনার জন্য উল্টো ক্রেতাদের অর্থ দিচ্ছেন। আসলে তেলের চাহিদা কমে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের তেল সংরক্ষণাগারগুলো আর অতিরিক্ত তেলের চাপ নিতে পারছে না। উৎপাদকেরা আশঙ্কা করছেন, মে মাসে সংরক্ষণাগার একেবারে উপচে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে এই তেল নিজেদের কাছ থেকে সরাতে চাইছেন তাঁরা। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম কমে প্রতি ব্যারেল হয়েছে মাইনাস ৩৭ দশমিক ৬৩ ডলার। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিশ্বজুড়ে লকডাউনের কারণে ভ্রমণ, মানুষের চলাচল সব বন্ধ। এতে তেলের চাহিদা একেবারেই নেই। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিভিন্ন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার সময় হওয়ায় তেলের দাম কমেছে। গতকাল মূলত মে মাসে যেসব তেল সরবরাহ করার কথা ছিল, সেগুলোর দাম কমেছে। কারণ সংরক্ষণাগারগুলোতে মে মাসের তেল রাখার জায়গা আর নেই। জুনে যে ডব্লিউটিআই তেল সরবরাহ করার কথা ছিল, তার দাম গতকাল কমে ব্যারেলপ্রতি ২০ ডলারে ঠেকেছে। অন্যদিকে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৮ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গতকাল হয়েছে ব্যারেলপ্রতি ২৬ ডলার। বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, বিশ্বজুড়ে লকডাউন জারি থাকলে জুনে যেসব তেল সরবরাহ করার কথা, তার দামও আরও কমতে পারে।
মূলত করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে চাহিদা কমেছে জ্বালানি তেলের বাজার। ফলে বিশ্ববাজারে হু হু করে কমছে দাম। যুক্তরাষ্ট্রের তেল সংরক্ষণাগারগুলো অতিরিক্ত তেলের চাপ আর নিতে পারছে না। এতে দাম আরও কমে যাচ্ছে। মার্চের শেষে ১৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে দাম।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
