এই পৃথিবী এবং মহাবিশ্ব নিয়ে মানুষের কৌতূহলের যেন শেষ নেই। বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত অনুসন্ধান করছেন পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথাও আমাদের কোন প্রতিবেশী আছে কি না। মানুষ শত শত বছর ধরে ভিনগ্রহের প্রানি নিয়ে প্রশ্ন করে আসছে। এসব নিয়ে রয়েছে বিজ্ঞানীদের গবেষণা, প্রচলিত গল্প, কল্পকাহিনী, নানা ধারনা ও উদ্ভট তত্ত্ব। এমনকি ভিনগ্রহের জীবন খোঁজার চিন্তা প্রাচীন গ্রীকদের সময় থেকে মানুষকে মুগ্ধ করেছে।
তবে সম্প্রতি ভিনগ্রহী প্রাণের সন্ধান নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ তার প্রথম অভিযানে ১৩৫০ কোটি বছর আগের প্রথম দিকে সৃষ্ট নক্ষত্রগুলোর বিরল ছবি প্রকাশ করেছিল। এবার ভিন্ন এক জগতের ভিন্ন কোনো গ্রহে পানি-মেঘ-ধোঁয়ার স্পষ্ট ছবি প্রকাশ করেছে জেমস ওয়েব।
এক হাজার আলোকবর্ষ দূরের এক জগৎ। সেখানেও আছে এক সূর্য। আর তাকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে এক দৈত্যাকার গ্যাসীয় পিণ্ড। ঠিক যেন এই পৃথিবীরই প্রতিবিম্ব, মহাকাশের নিকশ কালো অন্ধকারে কোনো এক আয়নায় ফুটে উঠেছে। তাতে পানি, মেঘ, ধোঁয়া… সবকিছুরই চিহ্ন স্পষ্ট। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের দ্বিতীয় চমক এটি। গত ১২ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে জেমস ওয়েবের তোলা এক নির্মীয়মাণ নক্ষত্রপুঞ্জের সমাহারের ছবি।
পৃথিবীর মতো প্রাণের অনুকূল কোনো গ্রহ যে থাকতে পারে, তেমন ইঙ্গিত আগেও মিলেছিল। টেলিস্কোপের লেন্সে ধরা পড়া কোনো কোনো ভিনগ্রহের ছবি দেখে কৌতূহলও জন্মেছে। কিন্তু এমন স্পষ্ট ছবি, জেমস ওয়েবের আগে কেউই দেয়নি। পৃথিবীর বুকে একটি বালুকণা যতটুকু আয়তনের, ডিপ ফিল্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে মহাবিশ্বের সুদূরতম এক অঞ্চলের ততটুকু স্থানের ছবি তুলেছে জেমস ওয়েব। অথচ সেই এক কণার মধ্যেই দেখা গেছে স্ম্যাক্স ০৭২৩ (SMACS 0723) নামক এক ছায়াপথ গুচ্ছ। এই গুচ্ছে কেবল ছায়াপথের সংখ্যাই হাজার হাজার।
এই ছায়াপথগুলোতে রয়েছে অসংখ্য নক্ষত্র; অধিকাংশেরই আছে নিজস্ব গ্রহ ও উপগ্রহ। এসব গ্রহ আবার ঘুরছে নিজ নিজ নক্ষত্রের চারপাশে। এভাবে তৈরি হয়েছে এক একটি সৌরজগৎ। এখন একবার ভাবুন, প্রতিটি ছায়াপথে যদি গড়ে ১০ হাজার কোটি নক্ষত্রও থাকে, তাহলে এই একটি ছবিতে ঠিক কতগুলো সৌরজগত রয়েছে!
আমরা আকাশগঙ্গা (মিল্কিওয়ে) ছায়াপথের বাসিন্দা। আমাদের সূর্য এবং তার সৌরজগতের অবস্থান এই ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে প্রায় ২৭ হাজার আলোকবর্ষ দূরে কালপুরুষ বাহুতে। আমাদের সৌরজগতে বাসযোগ্য গ্রহ- পৃথিবী। সম্ভাব্য বাসযোগ্যদের কাতারে আছে- মঙ্গল, ইউরোপা, এনসেলাডুস ও টাইটান। বাসযোগ্য জগতের এই মেলার দিকে তাকিয়ে ধারণা করাই যায় যে, নতুন ছায়াপথগুচ্ছের গ্রহ ও উপগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা বহুগুণ বেশি। এটাও মনে রাখা উচিত, মহাবিশ্বে এমন ছায়াপথগুচ্ছের অভাব নেই। অর্থাৎ, ভিনগ্রহের জীবন নিছক কোনো কল্পনা নয়, বরং অপেক্ষা করছে বৈজ্ঞানিক প্রমাণের।
আরো পড়ুন:
অসুস্থ রেমিট্যান্স যোদ্ধার পাশে দাঁড়ালো দূতাবাস
প্রবাসীদের জন্য যেসব পেশা নিষিদ্ধ করলো ওমান
ভিসা ছাড়াই ৪১ টি দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন বাংলাদেশিরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে পাত্তা-ই দিলোনা সৌদি আরব!
দেশে জ্বালানী সংকট, মসজিদের এসি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলো সরকার
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
