বিদেশফেরত বা ঘুরতে গিয়ে দেশে ফেরার পথে যেকোনো যাত্রী বৈধভাবে ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার ও ২০০ গ্রাম রৌপ্যের অলংকার আনতে পারবেন। এই নির্দিষ্ট পরিমাণ অলংকার আনলে সরকারকে কোনো কর দিতে হবে না।
তবে কোনো যাত্রী স্বর্ণবার আনতে চাইলেও সে সুযোগ রেখেছে রাজস্ব বোর্ড। একজন যাত্রী দেশে আসার সময় ২৩৪ গ্রাম স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড এবং রৌপ্যবার বা রৌপ্যপিণ্ড আনতে পারবেন। যার জন্য প্রতি ১১.৬৬ গ্রাম স্বর্ণে তিন হাজার টাকা ও একই পরিমাণ রৌপ্যে ১১.৬৬ গ্রামে ছয় টাকা করে কর দিতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে জারি করা যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালায়-২০১৬ প্রজ্ঞাপনে এই সুযোগ রাখা হয়েছে। যাত্রীর পেশাগত কাজে ব্যবহার্য ও সহজে বহনযোগ্য যন্ত্রপাতি শুল্ক ছাড়াই আমদানি করতে পারবেন। আকাশ ও পানিপথে আসা ১২ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের যাত্রীর সঙ্গে হাতব্যাগ, কেবিনব্যাগ ও অন্যবিধ উপায়ে আনীত ৬৫ কেজি ওজন পর্যন্ত ব্যাগেজ বহন করতে পারবে।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আকাশপথ, জলপথ বা স্থলপথে আগত একজন অসুস্থ, পঙ্গু অথবা বৃদ্ধ যাত্রীর ব্যবহার্য চিকিত্সা যন্ত্রপাতি ও হুইল চেয়ার শুল্ক ও কর পরিশোধ ব্যতীত খালাস করতে পারবেন। তবে সব যাত্রীকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে তফলিস-১ বর্ণিত ফরম পূরণ করে ব্যাগেজ ঘোষণা দিতে হবে। বাণিজ্যিক ব্যাগেজ আমদানির ক্ষেত্রে পণ্যের বর্ণনা ও ব্যবহার সম্পর্কে লিখে ঘোষণা দিতে হবে।
বিনা শুল্কে আমদানি করা পণ্যের তালিকায় রয়েছে দুটি মোবাইল বা সেলুলার ফোনসেট। অর্থাৎ কেউ দুটি মোবাইল ফোন আনলে কোনো শুল্ক দিতে হবে না। ক্যাসেট প্লেয়ার/টু-ইন ওয়ান, ডিস্কম্যান/ওয়াকম্যান (অডিও), বহনযোগ্য অডিও সিডি প্লেয়ার, একটি ইউপিএসসহ ডেস্কটপ/ল্যাপটপ কম্পিউটার, কম্পিউটার স্ক্যানার, কম্পিউটার প্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন, ভিডিও ক্যামেরা, স্টিল ক্যামেরা বা ডিজিটাল ক্যামেরা, সাধারণ/পুশবাটন/কর্ডলেস টেলিফোনসেট, সাধারণ বা ইলেকট্রিক ওভেন বা মাইক্রোওয়েভ ওভেন, বার্নারসহ রাইস কুকার, প্রেসার কুকার ও গ্যাস ওয়েন, টোস্টার, স্যান্ডউইচ মেকার, ব্লেন্ডার, ফুড প্রসেসর, জুসার ও কফিমেকার, সাধারণ ও বৈদ্যুতিক টাইপরাইটার, বৈদ্যুতিক ও ম্যানুয়াল গৃহস্থালি সেলাই মেশিন, টেবিল, প্যাডেস্টাল ফ্যান ও গৃহস্থালি সিলিং ফ্যান, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য স্পোর্টস সরঞ্জাম, ২০০ শলাকার এক কার্টন সিগারেট, ২১ ইঞ্চি পর্যন্ত প্লাজমা, এলসিডি, টিএফটি ও এলইডি টিভি এবং ২৯ ইঞ্চি পর্যন্ত সিআরটি সাদা-কালো ও রঙিন টেলিভিশন, ভিসিআর ও ভিসিপি, সাধারণ সিপি ও দুটি স্পিকারসহ কম্পোন্যান্ট, চার স্পিকারসহ কম্পোন্যান্ট এবং ১৯ ইঞ্চি এলসিডি কম্পিউটার মনিটর আনতে পারবেন কর ছাড়াই।
করযোগ্য পণ্যগুলোর তালিকায় রয়েছে—প্লাজমা, এলসিডি, টিএফটি ও এলইডি প্রযুক্তির ৩০-৩৬ ইঞ্চি পর্যন্ত কর দিতে হবে ১০ হাজার টাকা, ৩৭-৪২ ইঞ্চিতে কর ২০ হাজার টাকা, ৪৩-৪৬ ইঞ্চিতে ৩০ হাজার টাকা, ৪৭-৫২ ইঞ্চিতে ৫০ হাজার টাকা ও ৫৩ ইঞ্চির চেয়ে বেশিতে কর দিতে হবে ৭০ হাজার টাকা।
চারের বেশি সর্বোচ্চ আট স্পিকারসহ মিউজিক সেন্টার, স্পিকার নির্বিশেষ হোম থিয়েটারে কর আট হাজার টাকা। রেফ্রিজারেটর ও ডিপ ফ্রিজে কর পাঁচ হাজার টাকা, এয়ারকুলার ও এয়ারকন্ডিশনারের ক্ষেত্রে উইনডো টাইপে সাত হাজার টাকা, স্পিট টাইপে (১৮০০০ বিটিইউ) ১৫ হাজার টাকা ও স্পিট টাইপে (১৮০০০ বিটিইউ বেশি) ২০ হাজার টাকা।
ডিস অ্যান্টেনায় সাত হাজার টাকা, স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিণ্ড (সর্বোচ্চ ২৩৪ গ্রাম বা ২০ তোলায় প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রামে তিন হাজার টাকা, রৌপ্যবার বা রৌপ্যপিণ্ডে প্রতি ১১.৬৬৪ গ্রামে ছয় টাকা, এইডি ক্যাম, ডিভি ক্যাম, বিইটিএস ক্যাম ও প্রফেশনাল কাজে ব্যবহূত হয় এ রকম ক্যামেরায় ১৫ হাজার টাকা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে আনা এয়ারগান ও এয়ার রাইফেলে পাঁচ হাজার টাকা, ঝাড়বাতিতে কর ৩০০ টাকা, কার্পেট ১৫ বর্গমিটার পর্যন্ত ১৫০ টাকা (প্রতি বর্গমিটারে) ও ডিশ ওয়াশার, ওয়াশিং মেশিন ও ক্লথ ড্রাইয়ার তিন হাজার টাকা কর দিতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
