ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরান যদি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে না আসে, তবে তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সামরিক হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সোমবার (১৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের ধারণা থেকেও সরে আসতে হবে। তারা কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না।”
ট্রাম্পের এই কঠোর মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। যদিও উভয় পক্ষ এই আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ ও ‘গঠনমূলক’ বলে অভিহিত করেছে, ট্রাম্পের মতে, ইরান আলোচনায় অগ্রগতি না ঘটিয়ে কেবল সময়ক্ষেপণ করছে। ওমানের এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। চলতি সপ্তাহের শেষে আলোচনার পরবর্তী পর্বও ওমানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্রের খবর, আলোচনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে এবং উভয় পক্ষ একটি সম্ভাব্য চুক্তির রূপরেখা তৈরির চেষ্টা করছে।
তবে ট্রাম্প তার অবস্থানে অনড়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “চুক্তি স্পষ্ট হতে হবে—ইরান কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না, এটিই চূড়ান্ত।” সামরিক হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অবশ্যই সেই অপশন খোলা আছে।” তিনি আরও দাবি করেন, “ইরান অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পর্যায়ে, তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে ইরানের সঙ্গে যে পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল, ট্রাম্প তার প্রথম দফা প্রেসিডেন্সিতে তা বাতিল করেন। বাইডেন প্রশাসনের সময়েও আলোচনা হয়েছে, কিন্তু তা দৃশ্যমান অগ্রগতি আনতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি সূক্ষ্ম কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে। একদিকে কূটনৈতিক সমাধানের প্রত্যাশা, অন্যদিকে ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে উদ্ভূত নিরাপত্তা হুমকি। ইরান ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসন যেখানে সামরিক শক্তির ওপর জোর দিচ্ছে, পূর্বে বাইডেন প্রশাসন তুলনামূলকভাবে কূটনৈতিক পথে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়েছিল।
আরও দেখুন
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
