সিরিয়ার ওপর বিশ্বব্যাংকের ঋণের বোঝা লাঘব করতে একটি অভিনব পদক্ষেপ নিতে চলেছে সৌদি আরব। বিষয়টির সঙ্গে ওয়াকিবহাল তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, রিয়াদ এই ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা করছে। এর ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠন এবং দুর্বল সরকারি খাতকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত অনুদান ছাড়ের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এই পদক্ষেপকে সিরিয়ার জন্য সৌদি আরবের পক্ষ থেকে প্রথম কোনো উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তা হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষত ২০১১ সালে বিদ্রোহীদের মাধ্যমে বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতি চেষ্টার পর থেকে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তা সিরিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকতে থাকা দেশটির পক্ষে নিজস্ব বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার করে বিশ্বব্যাংকের প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করা কঠিন। আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী, এই ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত সিরিয়া নতুন কোনো অনুদান বা আর্থিক সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হবে। এর আগে জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহার করে ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত হয়নি।
অন্যদিকে, আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে কাতারের পক্ষ থেকেও একটি ইতিবাচক উদ্যোগ দেখা গেছে। গত মাসে দেশটি জর্ডানের মাধ্যমে সিরিয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য গ্যাস সরবরাহের একটি প্রস্তাব করেছে, যা ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনের অনুমোদন পেয়েছে বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের পদক্ষেপগুলি সিরিয়ার অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। তবে, সৌদি আরবের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে, সৌদি সরকার, বিশ্বব্যাংক ও সিরিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, সিরিয়া চলতি মাসের শেষের দিকে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক বসন্তকালীন বৈঠকে যোগ দিতে ওয়াশিংটনে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠাবে। আসাদ সরকারের পতনের পর এটাই হবে সিরিয়ার কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর। তবে, এই প্রতিনিধিদল কোনো মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিরিয়ার ওপর আরোপিত কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল রয়েছে, যদিও সম্প্রতি মানবিক সহায়তার জন্য কিছু ক্ষেত্রে ছয় মাসের ছাড় দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায়, সৌদি আরবের ঋণ পরিশোধের উদ্যোগ এবং কাতারের গ্যাস সরবরাহের প্রস্তাব দেশটির পুনর্গঠনের পথে কতটা সহায়ক হবে, তা সময়ই বলবে।
আরও দেখুন
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।




















