‘স্ব-নির্বাসন বেছে নাও।’ মার্কিন বিদেশ দফতর থেকে এমনই ইমেল পাচ্ছেন সেই দেশে পাঠরত শয়ে শয়ে বিদেশি পড়ুয়া। এর মধ্যে কয়েকশো ভারতীয় শিক্ষার্থীও আছেন। সম্প্রতি জানা গিয়েছিল, যে সমস্ত পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসে কোনও প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে, বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী’ পোস্ট শেয়ার করেছেন বা লাইক করেছে, তাদেরকেই এই ইমেল পাঠাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবার সে দেশে ছোটোখাটো অপরাধ বা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করলেই বিদেশি পড়ুয়াদের আসছে স্ব-নির্বাসনের ইমেইল।
প্রতিবেদন অনুসারে, গত কয়েকদিনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক ডজন ভারতীয় শিক্ষার্থী তাদের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইমেল পেয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে তাদের এফ-১ স্টুডেন্ট ভিসা আর বৈধ নয় এবং তাদের অবিলম্বে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীদের অতীতের ফৌজদারি অপরাধের উল্লেখ করা হয়েছে- মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে দোকানে চুরি। শিক্ষার্থীদের ইমেল পাঠিয়ে ‘সেল্ফ ডিপোর্ট’ অর্থাৎ ‘সিবিপি’ অ্যাপের মাধ্যমে স্ব-নির্বাসনের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তা না করলে, তাদেরকে জোর করে নির্বাসন দেবে ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের ভবিষ্যতে আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নাও দেওয়া হতে পারে। অ্যারিজোনা, কর্নেল, টেক্সাস, কলোরাডো, নর্থ ক্যারোলিনা বা ওরিগন বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু বিদেশি পড়ুয়াকেও ভিসা বাতিল করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। এরমধ্যে অনেকেই ছোটখাটো ট্রাফিক আইন ভাঙার মতো মামলায় জড়িত।
যদিও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মতে, প্রতিটি অপরাধের ফল দেশত্যাগ হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনজীবীরা বলছেন, অতীতে খুব কমই দেশত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। মদ্যপান করে গাড়ি চালানো, লেন পরিবর্তন করা বা অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর মতো অপরাধের জন্য ভিসা বাতিল করা অত্যন্ত বিরল। টেক্সাসের অভিবাসন আইনজীবী চাঁদ পারাভাথনেনি বলেন,’ গত চার দিনে একই রকম মামলা নিয়ে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিনি অনেক ফোন পেয়েছেন।
এর আগে টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাম্পাসে অতি সক্রিয়তার কারণে সব মিলিয়ে বেশ কয়েকজন ভারতীয়-সহ ৩০০ জনেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই কঠোর পদক্ষেপের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।‘ সেই আবহে আরও শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হবে’ বলে মন্তব্য করে তাঁদের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এই কঠোর অবস্থান নেওয়া হচ্ছে। অবশ্য কী কী পদক্ষেপে তাদের ভিসা বাতিল করা হবে, তখন তা নির্দিষ্ট করেননি রুবিও।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
