২০০৯ সালে সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি (সিডিএমপি) ও জাইকার এক যৌথ জরিপের ফল বলছে, ঢাকায় ৭ বা এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে শহরের ৭২ হাজার ভবন ভেঙে পড়বে; এক লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক-সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা এবং ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি ভূমিকম্প হয়। এতে দেশ দুটির ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ওই ভূমিকম্পে তুরস্কের এক লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি ভবনের ৫ লাখ ২০ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ধ্বসে পড়ে।
বাংলাদেশে এ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হলে এর চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী।
বুয়েটের এ শিক্ষক বলেন, “এ মাত্রার ভূমিকম্প বাংলাদেশে হবেই। বাংলাদেশ-ভারত বর্ডারেও হতে পারে, মধুপুর, শ্রীমঙ্গলেও হতে পারে। কিন্তু আমাদের এখানে ক্ষতি বেশি হবে, কারণ আমাদের জনসংখ্যা বেশি।
“যেহেতু ঘন ঘন ভূমিকম্প হয় না, দেড়শ বছরের চক্র- মানুষের স্মৃতিতে থাকে না। এখানে কয়েক লাখ মানুষ মারা যাবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, ঢাকা শহরে যেসব ভবন রয়েছে ভূমিকম্পে এর ১ শতাংশ ‘ধূলিসাৎ’ হলেও তাৎক্ষণিকভাবে দুই লাখ মানুষ হতাহত হবে; আর অবরুদ্ধ হবে ৫ থেকে ৭ লাখ মানুষ।
“যদিও ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে ঢাকার দূরত্ব ৭০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। আমাদের যে ক্ষয়ক্ষতি হবে, তারপরে আমরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াব, সে সক্ষমতা অর্জন করি নাই। অর্জন করার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি বা সরকারের পরিকল্পনা থাকা দরকার সেটা নাই।”
জনসংখ্যা বেশি, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জনগণের সচেতনতা ও সরকারের প্রস্তুতির অভাবের ফলে ঢাকা শহরের ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হবে বলে তিনি মনে করছেন।
ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাত মনে করছেন, ভূমিকম্পের বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের সচেতনতার অভাব রয়েছে, বড় বড় স্থাপনাগুলোও নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়নি- ফলে এ অঞ্চলে ভূমিকম্প হলে বড় ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
