বাংলাদেশ ও এশিয়ার পরাশক্তি চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ৫০ বছর পূর্ণ করেছে। দীর্ঘ এই সময়ে বাংলাদেশ দলগত রাজনীতি থেকে দূরে থেকে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বার্থে সমান পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীন শুধু সামরিক সরঞ্জামই নয়, বরং মূল্যবান সামরিক প্রযুক্তিও বাংলাদেশকে সরবরাহ করেছে, যা প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে হালকা অস্ত্র তৈরির অত্যাধুনিক প্রযুক্তি প্রদান করা হয়েছে। বিশেষ করে রকেট লঞ্চার এবং কাঁধে বহনযোগ্য স্বল্পপাল্লার বিমান বিধ্বংসী মিসাইলের মতো উন্নত প্রযুক্তি সরবরাহ করা হয়েছে, যা যুদ্ধে কৌশলগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধেও অনুরূপ অস্ত্রের কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াওয়েনের উপস্থিতিতে প্রকাশিত “ন্যাশনাল ইমেজ অফ চায়না ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক গবেষণাপত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশকে রাইফেল, রকেট লঞ্চার, ম্যানপেড হালকা ইউটিলিটি যানবাহনসহ ছোট ও মাঝারি আকারের অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও, বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি এবং বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সঙ্গে যৌথ চুক্তির মাধ্যমে দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের ভিত মজবুত করতে কাজ করছে চীন।
২০১২ সালে চীনের সহায়তায় বাংলাদেশ খুলনা শিপইয়ার্ডে প্রথম দেশীয়ভাবে নির্মিত পেট্রোল জাহাজ তৈরি করে। সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিরক্ষা শিল্পের বিকাশে চীন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছে।
চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে চীন সফরে যাচ্ছেন। এ সফরে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে চীনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বাংলাদেশ চীনের অন্যতম বৃহত্তম সামরিক সরঞ্জাম ক্রেতা।
চীন থেকে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সামুদ্রিক টহল জাহাজ, করভেট, ট্যাংক, যুদ্ধবিমান, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র আমদানি করেছে।
চীনের সরবরাহকৃত আধুনিক ও উচ্চ প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম তুলনামূলকভাবে কম খরচে পাওয়া যায় এবং এর সাথে কোনো রাজনৈতিক শর্ত থাকে না, যা অন্যান্য অস্ত্র রপ্তানিকারী দেশগুলোর ক্ষেত্রে বিরল।
এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করতে এবং দেশীয় উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীনের সহায়তা দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
