সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের জন্য মঙ্গলবার (১১ মার্চ) আসে একের পর এক দুঃসংবাদ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত একই দিনে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ জারি করেছেন। আদালতের বিচারক জাকির হোসেন গালিব, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দুদকের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম মঙ্গলবার আদালতে একটি বিশেষ আবেদন দাখিল করেন। এই আবেদনে, শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন সাতটি প্লট ও ফ্ল্যাট এবং ১২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। আদালত তাৎক্ষণিকভাবে এই আবেদন মঞ্জুর করেন এবং রুল জারি করে উল্লেখিত সম্পত্তিগুলো জব্দের নির্দেশ দেন।
জব্দকৃত সম্পত্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঢাকার অভিজাত এলাকা ধানমন্ডির সুধাসদন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট, শেখ রেহানার সেগুনবাগিচার ফ্ল্যাট এবং গাজীপুরে অবস্থিত দুটি জমি। এছাড়াও, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের নামে নিকেতনে থাকা দুটি প্লটও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
দুদক আদালতকে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা এই সম্পত্তিগুলো যেকোনো মুহূর্তে হস্তান্তর অথবা অবৈধভাবে স্থানান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই যুক্তির ভিত্তিতে, দুদক জরুরি ভিত্তিতে সম্পত্তিগুলো অবরুদ্ধ করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানায়।
একই দিনে, আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের আরেকটি আবেদনের শুনানি শেষে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক এবং পুত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিদেশ যাত্রার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দুদকের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছিল।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত করছে দুদকের একটি বিশেষ দল। এই দলের প্রধান, উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম, অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযুক্তদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানি শেষে সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতের এই জোড়া নির্দেশে, রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে সরকারের কঠোর অবস্থান আরও স্পষ্ট হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
