মুখে বন্ধুত্বের বার্তা দিলেও, বাস্তবে নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর ভারতের জন্য কোনও ইতিবাচক ফল নিয়ে আসেনি। বরং, সফরের পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা দেশটির জ্বালানি খাতকে বড় ধরনের সংকটে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি এই ঘোষণা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, ভারতের কয়েকটি তেল কোম্পানি ইরানের সঙ্গে অবৈধভাবে লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছে, যা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে ভারতের চারটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাকে। এই সংস্থাগুলো হলো – অস্টিনশিপ ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, বিএসএম মেরিন এলএলপি, কসমোস লাইন্স ইনকর্পোরেশন এবং ফ্লাক্স মেরিটাইম এলএলপি। ওয়াশিংটন মনে করে, এই সংস্থাগুলি ইরানের জ্বালানি খাতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলছিল, যা প্রকারান্তরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করার শামিল।
এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পররাষ্ট্রনীতিকে সরাসরি ব্যর্থ বলে অভিহিত করেছে। তাদের মতে, মোদি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিলেও, তার ফলস্বরূপ এই নিষেধাজ্ঞাই জুটলো।
বিশ্লেষকদের মতে, মোদি সরকার শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালিয়েছে। ভারতীয় বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক হ্রাস করা, বিপুল পরিমাণে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কেনা এবং জ্বালানি আমদানির মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করার জন্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের প্রতি কঠোর মনোভাব বজায় রেখেছে, যা অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন যে, ভারতের জন্য আর কোনও বিশেষ সুবিধা থাকবে না। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণ করেছে, কিন্তু এখন থেকে সেই দিন শেষ। শুধু তাই নয়, অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদেরও নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন, যা ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
নতুন এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতের জ্বালানি সেক্টরে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ আসতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এখন পর্যন্ত মোদি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে, এই নিষেধাজ্ঞা ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, এবং সরকারের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের দিকে সকলের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
