সংযুক্ত আরব আমিরাতের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস। তিনি ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে অংশগ্রহণ এবং আমিরাতের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন, যা বাংলাদেশি প্রবাসী ও ব্যবসায়ী মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ড. ইউনুস। তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী এবং সিনিয়র সচিব লাবিয়া মুর্শেদ।
ড. ইউনুসের এই সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বাংলাদেশি নাগরিকদের উপর আরব আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী ড. আহমেদ বেলহুল আল ফালাসি এবং বাণিজ্যমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জাইদীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকগুলিতে বাংলাদেশ-আমিরাত সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়, যার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম বন্দরে আমিরাতের বিনিয়োগের সম্ভাবনা, এবং ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি।
ড. ইউনুস আমিরাতের কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জোরালো আবেদন জানান। পাশাপাশি, তিনি আমিরাতের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের জন্য আমন্ত্রণ জানান। এ প্রসঙ্গে আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে একটি বিশেষ শিল্প পার্ক স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সম্মতি প্রকাশ করেন।
হালাল পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশকে কেন্দ্রবিন্দু করার প্রস্তাব
ড. ইউনুস বৈঠকে আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বাংলাদেশকে হালাল পণ্য উৎপাদনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের স্বল্প খরচের শ্রমশক্তি এবং উৎপাদন সুবিধা কাজে লাগিয়ে আমিরাতের শিল্পগোষ্ঠীগুলি এখানে বিনিয়োগ করতে পারে।
এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী আগামী দিনগুলোতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এই সফরটি বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বাণিজ্যিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে আমিরাতের বিনিয়োগের সম্ভাবনা এই সম্পর্ককে আরও গতিশীল করতে পারে। এছাড়াও, বাংলাদেশি শ্রমবাজারে নতুন সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
ড. ইউনুসের এই সফর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক অগ্রগতির জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে গভীরতর সহযোগিতার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও বড় বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সাফল্য অর্জনের পথ প্রশস্ত হতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
