বাংলাদেশে ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টায় জড়িত এক গোপন নেটওয়ার্কের মুখোশ উন্মোচন করেছেন প্রবাসী সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সময় বিকাল আনুমানিক ৪টা ৪০ মিনিটে তাঁর ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট প্রকাশ করেন। পোস্টে তিনি ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন “রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ” (আরএসএস) এবং এর নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের এক শিক্ষকের যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করে তীব্র সমালোচনা করেন।
জুলকার নাইন সায়ের তাঁর পোস্টে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তীর নাম উল্লেখ করে প্রশ্ন তোলেন, “কুশল বরণ চক্রবর্তী এখন কোথায়?
চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টায় মরিয়া এই মাস্টারমাইন্ড কে?” তিনি কুশল বরণের ২০২২ সালের ২৫ জুনের একটি ফেসবুক পোস্টের সাথেও সংযুক্ত ছবি শেয়ার করেন, যেখানে ভারতের আরএসএসকে একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পোস্টে আরএসএসের সিনিয়র নেতা স্বামী অসীমানন্দের কথাও উল্লেখ করা হয়, যিনি ভারতের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০০৭ সালে হায়দ্রাবাদের মক্কা মসজিদে বিস্ফোরণ, আজমীর শরীফে বোমা হামলা এবং মালেগাঁও সিরিজ বোমা হামলার মতো ঘটনাগুলোতে তাঁর সম্পৃক্ততা ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) নিশ্চিত করেছে। তবে তথ্য-প্রমাণের অভাবে তিনি ও অন্যান্য সন্দেহভাজন জঙ্গিরা ছাড়া পেয়ে যান।
জুলকার নাইন সায়ের আরও উল্লেখ করেন, আরএসএসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বিভিন্ন সময় মুসলমানদের বিরুদ্ধে কটূক্তি ও হুমকি প্রদান করেছেন। সম্প্রতি উত্তর প্রদেশে ঈদের নামাজ নিষিদ্ধ করা এবং মসজিদের মাইক জব্দ করার মতো ঘটনাগুলোও তিনি তুলে ধরেন।
এই প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি কোনো ব্যক্তি অন্য ধর্মের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কিত হন এবং দেশে ফিরে আসেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়?
তাহলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী কীভাবে ভারতের দুই শীর্ষ আরএসএস নেতা যোগী আদিত্যনাথ ও কেশব প্রসাদ মৌর্য্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেও বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার নজর এড়িয়ে যাচ্ছেন?”
কুশল বরণ চক্রবর্তীর ফেসবুক পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে জুলকার নাইন সায়ের দাবি করেন, তাঁর লেখায় হিন্দুত্ববাদের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত রয়েছে এবং তিনি আরএসএসের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
এই প্রেক্ষাপটে জুলকার নাইন সায়ের প্রশ্ন তোলেন, “কুশল বরণ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এখনও কোনো তদন্ত কেন শুরু হয়নি? বাংলাদেশে ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টির ষড়যন্ত্রে জড়িত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?”
এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, তা এখন দেখার বিষয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
