ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯-জুলাই) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের ২২টি দেশের মধ্যে ১৫টিতেই উচ্চ সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনার এই ধরনটি মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে টিকা দানের হার খুবই কম, সেসব দেশে এই প্রাদুর্ভাব সৃষ্টি করেছে। ওই অঞ্চলের মরক্কো থেকে পাকিস্তান পর্যন্ত ২২টি দেশের মধ্যে ১৫টিতে এরই মধ্যে এই ডেল্টা ধরনটি রেকর্ড করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক এবং ওমান সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা আহমেদ আল-মান্ধারি বলেন, করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন তীব্র সংক্রমণপ্রবণ। ফলে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ব্যাপক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এসব অঞ্চলে এখন করোনার চতুর্থ ঢেউ চলছে।
আরো পড়ুনঃ
করোনা রোগীকে স্পর্শ করলেই করোনা হয় না
যেভাবে সরকারি অনুদান পাবেন প্রবাসীরা
ওমান ও বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত করোনা ভ্যাকসিনের তালিকা
মান্ধারি আরো বলেন, প্রায় এক মাস ধরে ইরান, ইরাক, তিউনিসিয়া ও লিবিয়ায় প্রতিদিন গড়ে ৩ লাখ ১০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। যার মধ্যে গড়ে মারা যাচ্ছেন ৩ হাজার ৫০০ জন। এর আগের মাসের তুলনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৫৫ শতাংশ, মৃত্যুর হার বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।
ডব্লিউএইচও’র পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের এই প্রধান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশসমূহের হাসপাতালগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত রোগী থাকায় কোনো কোনো হাসপাতাল নতুন রোগী ভর্তি করা বন্ধ করে দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতির আশা কম।

ডব্লিউএইচও’র তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে করোনা টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন ৪ কোটি ১০ লাখ মানুষ, যা এশিয়ার ওই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা ব্যক্তিদের ৪০ শতাংশই মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত দেশসমূহের নাগরিক।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় বর্তমান সময়ে ওমানের করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও যেকোনো সময় এর অবনতি হতে পারে এমন আশংকা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ওমান স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী গত ২৯-জুলাই নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩২২ জন এবং মৃতের সংখ্যা ১২ জন। ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫৮ জন এবং আইসিইউতে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৬০ জন। হাঁসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন সর্বমোট ৬১৮ জন। বর্তমানে দেশটির সুস্থতার সূচক রয়েছে ৯৪ শতাংশে।
এদিকে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে। দেশগুলো করোনা নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে তাতে খুব বেশি সফলতা আসছে না। দেশগুলোতে অক্সিজেনের ঘাটতি ও হাসপাতালে শয্যার অভাব প্রকট, যা এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যব্যবস্থার অক্ষমতাকে স্পষ্ট করে তুলছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
