ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা সর্বজনবিদিত। এক সময় মোদির মার্কিন সফরে তাকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। এমনকি ভারতে ট্রাম্পের নামে একটি মন্দির স্থাপন করে তাকে দেবতার মতো পূজা করার খবরও আলোচনায় আসে।
তবে, ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর তার কঠোর অভিবাসন নীতি ভারতীয় প্রবাসীদের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা হয়ে দেখা দিয়েছে। ক্ষমতায় আসার পরই অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেন তিনি। এই পদক্ষেপে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে হাজার হাজার ভারতীয় অভিবাসীর।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ’-এর এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকার যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে চিহ্নিত করেছে। তাদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন।
অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর এই প্রক্রিয়ায় ভারত সরকারও সমর্থন জানিয়েছে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিহ্নিত সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এই তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমীক্ষা সংস্থা ‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’ জানায়, অবৈধ অভিবাসনের দিক থেকে ভারতীয়রা যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মেক্সিকো ও এল সালভাদর।
‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’-এর তথ্য অনুসারে, বর্তমানে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার ভারতীয় বিনা নথিতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে বছরের পর বছর ধরে পরিবার ও কর্মসংস্থানের ভিত্তিতে আমেরিকায় বসবাস করছেন। তবে ট্রাম্পের কঠোর নীতির ফলে এই অভিবাসীরা বর্তমানে গুরুতর অনিশ্চয়তার মুখোমুখি।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির এই পরিবর্তন শুধুমাত্র ভারতীয় অভিবাসীদের জন্য নয়, বরং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্যও নতুন বাস্তবতা তৈরি করেছে। এর ফলে ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয়রা এই তালিকায় উল্লেখযোগ্য অবস্থান দখল করায় নীতি বাস্তবায়নে তাদের ওপর বিশেষ প্রভাব পড়ছে। বিষয়টি শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেই নয়, বরং সামাজিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
