মহাকাশের রহস্যময় নীরবতার মধ্যেও শোনা গেল এক অভূতপূর্ব শব্দ। নাসার সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ তথ্য—মহাকাশে প্রতিনিয়ত একটি ধ্বনি শোনা যায়, যা যেন কোটি কোটি মানুষের সমবেত সুরের মতো শোনায়। এই আবিষ্কার প্রাসঙ্গিক করেছে ১৪০০ বছর আগের একটি হাদিস, যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উল্লেখ করেছিলেন যে, ফেরেশতারা আকাশে প্রতিনিয়ত আল্লাহর জিকির করছেন।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, শবে মেরাজের রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আকাশের ভেতর এক রহস্যময় শব্দ শুনেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আকাশের প্রতিটি কোণ থেকে এক তীব্র কম্পনের শব্দ আসে, কারণ আকাশে এমন কোনো চার আঙুল পরিমাণ জায়গা নেই যেখানে ফেরেশতারা সিজদায় রত নন।”
অন্যদিকে, বিজ্ঞানীদের মতে, মহাকাশ একটি বায়ুশূন্য স্থান হওয়ায় সেখানে সাধারণত শব্দ শোনা সম্ভব নয়। কিন্তু নাসার গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাকাশে বিদ্যমান বিভিন্ন কণা ও রেডিয়েশনের কম্পনের কারণে নিরবচ্ছিন্ন শব্দ উৎপন্ন হয়। এই শব্দগুলো ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ আকারে ছড়িয়ে পড়ে, যা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে রেকর্ড করা সম্ভব হয়েছে।
নাসার “আওয়ার ইউনিভার্স ইজ নট সাইলেন্ট” এবং “লিসেন টু দ্য ইউনিভার্স” প্রকল্পে মহাকাশের শব্দ রেকর্ড করা হয়েছে। গবেষকদের মতে, মহাশূন্যে বিভিন্ন নক্ষত্র ও গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্র এবং রেডিয়েশনের কম্পন এই শব্দ তৈরি করে। তাদের মতে, এই শব্দ এমনই রহস্যময় যে, মনে হয় কোটি কোটি মানুষ একত্রে গ্রেগোরিয়ান চ্যান্ট গাইছে। উল্লেখ্য, গ্রেগোরিয়ান চ্যান্ট হলো খ্রিস্টান ধর্মীয় সঙ্গীতের একটি রূপ, যা দলগতভাবে পরিবেশিত হয়।
বিজ্ঞানীরা শব্দের উৎস নিয়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেও এর অনেকটাই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়। রাসূলের ভাষ্যমতে, ফেরেশতারা আকাশের প্রতিটি কোণে আল্লাহর জিকির করছেন। তবে আধুনিক বিজ্ঞান এটি ব্যাখ্যা করছে নক্ষত্রের বিকিরণ ও মহাকাশের কম্পনের ফলে সৃষ্ট শব্দ হিসেবে।
নাসার এই আবিষ্কার নতুন করে আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ১৪০০ বছর আগের ঐশী বার্তাগুলোর তাৎপর্য কত গভীর। মহাকাশের শব্দগুলো কি সত্যিই ফেরেশতাদের জিকির? এর প্রকৃত উত্তর একমাত্র আল্লাহই জানেন। তবে এটি নিঃসন্দেহে একটি অনন্য আবিষ্কার, যা আমাদের বিজ্ঞান ও বিশ্বাসের সংযোগ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
