বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে কোণঠাসা অবস্থায় মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এরই মাঝে রাশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী যুদ্ধবিমান যুক্ত হলো মিয়ানমারের বিমান বাহিনীতে। দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে এসব যুদ্ধবিমান হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু এর বিনিময়ে রাশিয়া যা পেয়েছে তা অপ্রত্যাশিত।
রবিবার রেডিও ফ্রান্সের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ওই ছয় যুদ্ধবিমানের বিপরীতে রাশিয়াকে ছয়টি হাতি হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার। তবে আনুষ্ঠানিকাভবে এগুলো যুদ্ধবিমানের বিনিময়মূল্য হিসেবে দেয়া হয়েছে কিনা তা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যদিও রেডিও ফ্রান্সসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, হাতিগুলো যুদ্ধবিমানের মূল্য পরিশোধের অংশ হিসেবেই দেয়া হয়েছে।
রেডিও ফ্রান্স জানায়, ২০১৮ সালে ছয়টি এসইউ-থার্টি যুদ্ধবিমান ক্রয়ের জন্য মস্কোর সাথে ৪০০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সামরিক চুক্তি করে নেপিডো। এরপর তিন ধাপে বিমানগুলো সরবরাহ করা হলো। এরপরই রাশিয়াকে ছয়টি হাতি পাঠালো মিয়ানমার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে আদান-প্রদান বাড়ছে। রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক গভীর করতে বেশকিছু চুক্তি করেছে মিয়ানমার। এর মাঝে মিয়ানমার বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক চুক্তিও রয়েছে।
এদিকে কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, এসব হাতি সরাসরি মূল্য পরিশোধের অংশ না হয়ে প্রতীকী উপহারও হতে পারে। ২০২৩ সাল ছিল রাশিয়া ও মিয়ানমারের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তি। তার অংশ হিসেবেও মস্কোকে এসব হাতি পাঠাতে পারে নেপিডো।
এর আগেও নানা সময় হাতি কূটনীতির দ্বারস্থ হতে দেখা গেছে মিয়ানমারকে। গভীর বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে বিভিন্ন দেশকে হাতি উপহার দেয় তারা। মিয়ানমারে হাতিকে দেখা হয় ক্ষমতা ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হাতিগুলোর মাঝে একটি পুরুষ ও পাঁচটি নারী। এগুলো দেখভাল ও তদারকির দায়িত্ব পেয়েছে মস্কো স্টেইট সার্কাস। এরই মাঝে রাশিয়ায় পৌঁছানো হাতিগুলো পরিদর্শন করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া যাখারোভা।
এদিকে মিয়ানমার জান্তা সরকারের কঠোর সমালোচনা করে রেডিও ফ্রান্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নগ্ন সমর্থক জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লেইং। ইউক্রেন ও ক্রিমিয়ায় রুশ আগ্রাসনকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক নানা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এই জান্তা সরকারকে রাশিয়া ও চীন নানাভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করে রেডিও ফ্রান্স। সম্প্রতি সরবরাহ করা রুশ যুদ্ধবিমানগুলো সেই বার্তাই বহন করে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে নানা ভাবে রাশিয়া ও চীনের প্রতি নির্ভরতা বাড়াচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
