নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় প্রকাশ্য দিবালোকে শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩৬) নামে এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার দেবর সাইফুল ইসলাম ওরফে খালেদের (৩০) বিরুদ্ধে। একই ঘটনায় পিংকির শ্বশুর রেজাউল হক (৭২) গুরুতর আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকায় মাইল্যা বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পিংকি চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াবাড়ি এলাকার কুয়েত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী এবং দুই সন্তানের জননী।
নিহতের বড় বোন ফারজানা আক্তার সুমি জানান, ১৬ বছর আগে পিংকির সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের বিয়ে হয়। অভিযুক্ত খালেদ পিংকির দূর সম্পর্কের চাচাতো দেবর এবং একই বাড়িতে বসবাস করতেন। বছরখানেক আগে পিংকির মোবাইল নষ্ট হলে সেটি ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হয় খালেদকে। ওই সময় খালেদ মোবাইল থেকে পিংকির স্বামীকে পাঠানো ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও চুরি করে নিজের কাছে রেখে দেন। পরে সেগুলো ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে পিংকির কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা আদায় করেন তিনি।
এ ছাড়া, খালেদ পিংকিকে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর জন্য চাপ দেন। এতে ব্যর্থ হয়ে আরও অর্থ দাবি করেন এবং পরবর্তীতে পিংকির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। কয়েক মাস আগে এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন পিংকি।
মঙ্গলবার সকালে পিংকি তার শ্বশুরের সঙ্গে বাবার বাড়ি যাওয়ার পথে অভিযুক্ত খালেদ তাদের পথরোধ করেন। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি পিংকিকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন, ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। শ্বশুর রেজাউল হক বাধা দিতে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পিংকিকে মৃত ঘোষণা করেন।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহতের পরিবারের সঙ্গে অভিযুক্তের পরিবারের পূর্ব থেকে বিরোধ ছিল। তবে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই নির্মম ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
