আসছে সপ্তাহে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ ঈদকে কেন্দ্র করে চলছে কেনাকাটার ধুম। তাই পরিবার-পরিজনের বাড়তি খরচের কথা মাথায় রেখে বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন দেশের বাইরে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। রোববার প্রকাশ হওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি এপ্রিল মাসের ২১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪০ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ২০ পয়সা) এ অর্থের পরিমাণ ১২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
এবার রোজায় প্রতিদিন গড়ে ৬০০ কোটি টাকার মতো রেমিট্যান্স দেশে আসছে। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে এপ্রিল মাস শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রেমিট্যান্স বাড়ছে আমাদের জন্য এটা ভালো খবর। সাধারণত সব সময় ঈদ উৎসব বা বিভিন্ন পার্বণে আমাদের প্রবাসী ভাই বোনেরা দেশে বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও রমজানের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। আমরা আশা করছি, প্রবাসীদের অর্থ পাঠানোর এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি এপ্রিলে রেমিট্যান্স ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি এপ্রিলের ২১ তারিখ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬ কোটি ৪৯ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ১১১ কোটি ৮ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকে এসেছে দুই কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার।
এদিকে, গত ২১ দিনে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। আলোচিত সময়ে ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছে ৩১ কোটি ৮ লাখ ডলার। এরপর ডাচ বাংলা ব্যাংকে ১৯ কোটি ১ লাখ ডলার, অগ্রণী ব্যাংকে ৯ কোটি ৫২ লাখ ও সোনালী ব্যাংক ৮ কোটি ১৩ লাখ এবং ব্যাংক এশিয়ায় ৭ কোটি ১১ লাখ ডলার ।
দেশে ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ডলার। মার্চ মাসে প্রবাসীরা ১৮৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠান, যা আগের মাসের চেয়ে ২৪ শতাংশ বা ৩৬ কোটি ৫৫ লাখ ডলার বেশি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে রেমিট্যান্স বাড়লেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। গত বছরের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯১ কোটি ৯ লাখ ডলার।
এদিকে, গত অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। যা গত অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে সাত মাসই ২০০ কোটি ডলারের বেশি করে রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিয়ে আসছে সরকার। চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে সরকার রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে। অর্থাৎ এখন কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে, এর সঙ্গে আরও আড়াই টাকা যোগ হয়ে মোট ১০২ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছেন সুবিধাভোগীরা।
আরো পড়ুন:
পবিত্র কোরআন শরীফ কীভাবে ছাপা হয়?
সবাই আমার স্ত্রীকে চোরের বউ বলে আমাকে জামিন দেন
পাসপোর্ট অফিসে কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য, অনুসন্ধানে দুদক
প্রবাসী বন্ডে কমছে মুনাফার হার
স্বামীকে ফিল্মিস্টাইলে অপহরণ করলেন স্ত্রী
প্রবাসীদের মাঝে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া শুরু
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
