স্ভালবার্ড, যা আর্কটিক বৃত্তের উত্তরে অবস্থিত একটি মনোমুগ্ধকর দ্বীপপুঞ্জ, ভিসা ছাড়াই বসবাস এবং কাজ করার সুযোগ প্রদান করে। ১৯২০ সালের স্ভালবার্ড চুক্তির কারণে, বিশ্বের যে কোনো দেশের নাগরিক এখানে বসবাস করতে এবং কাজ করতে পারেন, কোনও রেসিডেন্স পারমিট বা ভিসা ছাড়াই।
তবে, স্ভালবার্ডে পৌঁছাতে হলে সাধারণত নরওয়ের মূল ভূখণ্ড হয়ে যেতে হয়, যা শেঞ্জেন অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত, এবং এই কারণে কিছু দেশের নাগরিকদের শেঞ্জেন ভিসা প্রয়োজন হতে পারে।
স্ভালবার্ড, বরফে ঢাকা একটি দ্বীপপুঞ্জ, যার বৈশিষ্ট্য হলো এর অত্যন্ত অতিথিপরায়ণ এবং স্বতন্ত্র পরিবেশ। বছরের বেশিরভাগ সময়ই এখানে তুষারপাত ও অন্ধকারের রূপ, কিন্তু এর মাঝে রয়েছে এক অদ্ভুত আকর্ষণ, যা পৃথিবীজুড়ে মানুষকে এখানে টেনে আনে। আর এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে বসবাস বা কাজ করার জন্য ভিসার কোনো প্রয়োজন নেই।
বিশেষ অভিবাসন নীতিমালা নরওয়ে দ্বারা শাসিত স্ভালবার্ডের অভিবাসন নীতিমালা একেবারেই আলাদা। ১৯২০ সালের স্ভালবার্ড চুক্তি অনুযায়ী, পৃথিবীর কোনো দেশ থেকেই এখানে আসা নাগরিকরা ভিসা বা রেসিডেন্স পারমিট ছাড়াই এখানকার জীবনযাপন, কাজ এবং ভ্রমণ করতে পারেন। এই নিয়ম স্ভালবার্ডকে একটি একক ও বিশেষ গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলেছে।
যদিও স্ভালবার্ডে ভিসা লাগে না, সেখানকার ভ্রমণের জন্য সাধারণত নরওয়ে গিয়ে পৌঁছাতে হয়। যেহেতু নরওয়ে শেঞ্জেন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত, কিছু দেশের নাগরিকদের শেঞ্জেন ভিসার প্রয়োজন হতে পারে, যা স্ভালবার্ডে প্রবেশের পূর্বশর্ত।
জীবনযাত্রার চ্যালেঞ্জ তবে, স্ভালবার্ডে জীবনযাপন নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জিং। এখানে কাজের সুযোগ সীমিত, এবং বেশিরভাগ মানুষ পর্যটন খাতে কাজ করেন, যেমন ট্যুর গাইড, হোটেল কর্মী, অথবা আতিথেয়তা খাতে। অনেক গবেষকও এখানে পরিবেশ সংক্রান্ত গবেষণা পরিচালনা করতে আসেন।
এছাড়া, স্ভালবার্ডের জীবনযাত্রা প্রাকৃতিকভাবে কঠিন। শীতকালে তাপমাত্রা প্রায় -২০° সেলসিয়াসে পৌঁছায় এবং বহু মাস ধরে অন্ধকার থাকে। গ্রীষ্মকালে ২৪ ঘণ্টা দিনের আলো থাকে। এখানকার বাসস্থানও সহজলভ্য নয় এবং বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে।
স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য বিষয় স্ভালবার্ডে সরকারি সামাজিক সুরক্ষা সেবা নেই। জরুরি চিকিৎসা পাওয়া গেলেও তা ব্যক্তিগত খরচে করতে হয়। দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবীমা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সর্বোপরি, স্ভালবার্ডে বসবাসের সুযোগ একটি অনন্য অভিজ্ঞতা হতে পারে, তবে সেখানে যাওয়ার আগে সুনির্দিষ্ট আয়ের উৎস, স্বাস্থ্য বীমা এবং শীতকালীন পরিবেশের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। যারা এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত, তাদের জন্য স্ভালবার্ড একটি বিরল এবং স্মরণীয় জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা দিতে সক্ষম।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
