সিলেট সুনামগঞ্জ অঞ্চলে বন্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। এই দুই জেলায় প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসনের হিসাবে বলা হচ্ছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে সুনামগঞ্জ শহর পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বন্যার পানিতে আটকে পড়া বানভাসিদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি মাঠে নেমেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টারও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হয়েছে। বন্যার কারণে ইতিমধ্যেই সারা দেশে ১৯শে জুন থেকে শুরু হওয়া স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
স্থানীয় মানুষজন বলছেন, ঘরবাড়ি পানির নিচে। চারপাশে অথৈই পানি। নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ারও উপায় নেই। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার একটি ইউনিয়নের সাবেক একজন চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন বলেন, বন্যার পানির কারণে পরিবারসহ তার বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। পানি নেই এমন এক ইঞ্চি জায়গা এখন মিলবে না সুনামগঞ্জ জেলায়।
তিনি আরো বলেন, “এলাকার প্রতিটা ঘরবাড়ি পানির নিচে। কোন কোন ঘরবাড়ির চালের ওপর দিয়ে পানি যাচ্ছে। মানুষের একটু আশ্রয় নেয়ার জায়গাও নাই। মানুষকে দ্রুত উদ্ধার করা না হলে লাশের মিছিল দেখা যাবে,” তিনি পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, গবাদিপশু, হাঁস মুরগি সব পানিতে ভেসে যাচ্ছে। সুনামগঞ্জে দু’টি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করছে না। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছে পানি চলে আসায় ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে অনেক প্রবাসী তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ না করতে পেরে চরম দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন। মালয়েশিয়া থেকে সাংবাদিক আহমেদুল কবির প্রবাস টাইমকে বলেন, গতকাল থেকে তার পরিবারের কারো সাথেই যোগাযোগ করতে পারছেননা। পরিবারের লোকজন বেঁচে আছে কিনা তাও জানেননা তিনি। এদিকে, সিলেটে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে। বন্যার কারণে অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিহীন হওয়ায় মোবাইলে চার্জ নেই। তাই অত্র অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের মোবাইল বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় প্রবাসীদের চিন্তা না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, সিলেট বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়া বিচ্ছিন্ন থাকবে বিদ্যুত সংযোগ। বাসা-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় এখনই বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হবে না। তবে এখন সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। কিছুক্ষণ বিচ্ছিন্ন থাকার পর জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুত সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, শনিবার বেলা ১২টা থেকে কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে ও শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রবেশ করা পানি সেচ দিয়ে শহরের জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুত সরবরাহ করা হবে। আর বাসাবাড়িতে পানি কমলে সংযোগ দেয়া হবে। এর আগে গত কয়েকদিন ধরে বন্যার পানি বাড়তে থাকায় সুনামগঞ্জ জেলা ও সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুরসহ আরো কিছু এলাকায় বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
আরো পড়ুন:
আন্দোলন করায় ১৭০০ কর্মীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে সৌদি
কোনো ভাবেই যেন থামছে না প্রবাসীদের হয়রানি।
নিজস্ব মুদ্রার ডিজিটাল সংস্করণ চালু করতে যাচ্ছে ওমান
শুধুমাত্র সৌদি প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৪২০ কোটি ডলার
ভারতীয় গম রপ্তানিতে আমিরাতের নিষেধাজ্ঞা
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
